বিনা পুঁজিতে ৬টি লাভজনক ব্যবসার আইডিয়া!
বিনা পুঁজিতে লাভজনক ব্যবসা খুঁজছেন কিন্তু আপনি কি জানেন বিনা পুঁজিতে সফল ব্যবসা করতে চাইলে আপনার নিজেকে অবশ্যই উক্ত ব্যবসায়ে দক্ষ হতে হবে। যদি আপনি যে ব্যবসাটি করতে চান সেটা সম্পর্কে ভালো জানেন এবং দক্ষ হয়ে থাকেন তবে আপনার বিনা পুঁজির ব্যবসাটি আপনাকে অবিশ্বাস্য সাফল্য এনে দিতে পারে।
বিনা পুঁজিতে লাভজনক ব্যবসা এর বাছাই করা ৬টি আইডিয়া
বিনা পুঁজিতে লাভজনক ব্যবসা করা অসম্ভব কিছু নয়। বেশ কিছু এ ধরনের ব্যবসা রয়েছে যেগুলো বিনা পুঁজিতে করা সম্ভব। বিনা পুজি বলতে একেবারে কোন বিনিয়োগই লাগবেনা ব্যবসা শুরু করতে, ব্যাপারটা এমন নয়। একটা পুঁজি ছাড়া ব্যবসা শুরু করতে গেলে ও এমন কিছু খরচ থাকে যা না করলেই নয়। যেমন আপনার ভিজিটিং কার্ড ছাপাতে হতে পারে, লিফলেট ছাপাতে হতে পারে, ওয়েবসাইট এর জন্য একটা ডোমেইন কিনতে হতে পারে ইত্যাদি। যদিও এগুলো খুবই মিনিমাম খরচ।
তো, এখানে কিছু বিনা পুঁজিতে শুরু করা যায় এমন কিছু লাভজনক ব্যবসা এর তালিকা দেয়া হল যেগুলো থেকে আপনি আপনার সুবিধামত ব্যবসা বাছাই করে কাজ শুরু করতে পারেন।
- ইনকাম ট্যাক্স প্রাকটিশনার।
- ট্রেনিং সেন্টার।
- ড্রপশিপিং।
- ব্লগিং।
- ভার্চুয়াল সহকারী।
- রুম শেয়ারিং ব্যবসা।
ইনকাম ট্যাক্স প্রাকটিশনার
ইনকাম ট্যাক্স উকিল বা আয়কর উপদেষ্টা বলেই আমরা চিনি এ পেশার লোকজনকে। এ পেশার লোকজন ইনকাম ট্যাক্স রিটার্ন প্রস্তুত ও জমা দেয়া, আয়কর সংক্রান্ত পরামর্শ দেয়া এসব কাজ করে থাকেন। এ পেশাটা ব্যক্তিগত দক্ষতা নির্ভর। আপনার যদি আয়কর উকিল (ইনকাম ট্যাক্স প্রাকটিশনার) হিসেবে কাজ করার জন্য ট্যাক্স বার ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ড থেকে সদস্যপদ নেয়া থাকে তাহলে আপনি মুক্ত পেশাজীবী হিসেবে আপনার ঘরে বসে ব্যবসা শুরু করতে পারেন। ইনকাম ট্যাক্স প্রাকটিশনার হিসেবে আপনি কোন কোম্পানির ইনকাম ট্যাক্স এডভাইজর বা কনসালটেন্ট হিসেবে ও প্রফেশনাল সার্ভিস দিতে পারেন। বিনা পুঁজিতে একটি অন্যতম লাভজনক ব্যবসা এটি।
এ ব্যবসায়ে ভালো কিছু করতে হলে আপনার এ কাজে যথেষ্ট দক্ষতা থাকতে হবে, ব্যক্তিগত ও সামাজিক যোগাযোগ শক্তিশালী নেটওয়ার্ক থাকতে হবে। একই সাথে আপনার কাজ যথেষ্ট ভালো হতে হবে যেটা আপনার ব্যবসায়িক সুনাম বাড়াতে সহায়তা করবে। এসমস্ত বিষয় আপনাকে নতুন নতুন ক্লায়েন্ট পেতে সহায়তা করবে।
সম্পর্কিত পোস্ট- বর্তমান সময়ে সবচেয়ে লাভজনক ব্যবসা।
ট্রেনিং সেন্টার
আপনার যদি নির্দিষ্ট কোন বিষয়ে ব্যক্তিগত স্কিল, প্রয়োজনীয় শিক্ষাগত যোগ্যতা(যদি দরকার হয়) এবং অভিজ্ঞতা থাকে তাহলে আপনি আপনার এই জ্ঞানকে কাজে লাগিয়ে রিলেটেড ট্রেনিং সেন্টার খুলতে পারেন। ব্যক্তিগত স্কিল ও অভিজ্ঞতা অনুসারে নিচের বিষয়গুলো এর উপরে ট্রেনিং সেন্টার খুলে বিনা পুঁজিতে লাভজনক ব্যবসা শুরু করতে পারেন (উদাহরণ স্বরূপ কিছু আইডিয়া দেয়া হল)। এর মধ্যে ২/১টি বাদে অধিকাংশ ব্যবসা আপনি ঘরে বসে শুরু করতে পারেন।
সম্পর্কিত পোস্ট- লস ছাড়া ব্যবসা।
ড্রপশিপিং
ড্রপশিপিং ব্যবসা কি? ড্রপশিপিং হল অন্যের পন্য আপনার মাধ্যমে বিক্রয় করা। যেখানে পণ্য এবং সেটা কাস্টমার এর নিকট পোঁছানর কাজটি যার পন্য তারা করে থাকেন। ক্রেতা আপনাকে পণ্য অর্ডার করল, আপনি মূল সাপ্লাইয়ারকে ক্রেতার বিস্তারিত সহ অর্ডার সাবমিট করলেন, মূল সাপ্লাইয়ার আপনার হয়ে অর্ডার টি ক্রেতা কে পোঁছে দিল। এখান ক্রেতা আপনার থেকে যে দামে কিনল আপনি তার চেয়ে কম দামে মূল সাপ্লাইয়ার থেকে পন্যটি কিনলেন। এটাই আপনার লাভ। এক্ষেত্রে অবশ্যই আপনার সাথে সাপ্লাইয়ারের একটা পূর্ব যোগাযোগ বা চুক্তি থাকা লাগবে।
এই ব্যবসাটির জন্য আপনার নিজস্ব একটা ইকমার্স সাইট থাকা লাগবে যেখানে কাস্টমার পণ্যটি অর্ডার করবে। অথবা আপনি থার্ড পার্টি ওয়েবসাইট ব্যবহার করতে পারেন। যেমন- shopify, aliexpress, ebay, amazon, spocket ইত্যাদি। অথবা আপনি একটা ফেসবুক পেজ খুলে ও প্রাথমিকভাবে এটা শুরু করতে পারেন। বিশ্বের অন্যান্য অনেক দেশের মতই বিনা পুঁজিতে লাভজনক ব্যবসা হিসেবে ড্রপশিপিং আমাদের দেশে ও জনপ্রিয় হয়ে উঠতে শুরু করেছে।
সম্পর্কিত পোস্ট- কম পুঁজিতে লাভজনক ব্যবসা।
ব্লগিং বিজনেস
ব্লগিং ও একটা বিনা পুঁজিতে লাভজনক ব্যবসা হতে পারে। কিভাবে ব্লগিং একটি লাভজনক ব্যবসার সোর্স হয়ে উঠতে পারে, বোঝার সুবিধার্থে নিচে দেয়া হল।
ব্লগিং একটি ঘরে বসে অনলাইন ব্যবসার আইডিয়া ও বটে। কারণ এই কাজটি আপনি আপনার ঘরে বসে করতে পারেন। Blogger বা WordPress এর মাধ্যমে একটি ডোমেইন কিনে আজই শুরু করে দিতে পারেন আপনার ব্লগিং বিজনেস।
ভার্চুয়াল সহকারী
বিনা পুঁজিতে লাভজনক ব্যবসা হিসেবে ভার্চুয়াল সহকারী সার্ভিস আপনার জন্য অন্যতম উপার্জনের উৎস ও হয়ে উঠতে পারে। এটি একটি ঘরে বসে অনলাইন ব্যবসা আইডিয়া কারণ আপনি ঘরে বসে এই ব্যবসাটি করতে পারেন। ভার্চুয়াল সহকারী কিভাবে একটি লাভজনক ব্যবসা হয়ে উঠতে পারে সেটা জানার আগে জানতে হবে এই কাজটি কি।
অনেক বড় প্রতিষ্ঠান কিংবা ব্যক্তিগত পর্যায়ে ও অনেকেই বিভিন্ন কাজে ভার্চুয়াল সহকারী এর সার্ভিস নিয়ে থাকে। এতে দ্রুত কাজ করিয়ে নেয়া যায় এবং কোন স্থায়ী কর্মী নিয়োগ এর ও দরকার হয়না বলে এই কাজটির চাহিদা বেশ কিছু বছর ধরেই বাড়ছে। ভার্চুয়াল সহকারী এর এই বাড়তি চাহিদাকে কাজে লাগিয়ে আপনি ও নিজ বাসা থেকেই একটি ভার্চুয়াল সার্ভিস প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান শুরু করে দিতে পারেন। এই কাজে আপনার নিজ বাসায় ব্যবহার করা কম্পিউটার এবং ইন্টারনেট কানেকশন থাকলেই চলবে। অবশ্যই সংশ্লিষ্ট কাজে আপনার ও আপনার টিম (যদি থাকে) এর ব্যক্তিগত দক্ষতা ও থাকা জরুরী।
উদাহরন স্বরূপ এমন কিছু চাহিদাসম্পন্ন কাজের তালিকা দেয়া হল যেগুলোর জন্য ক্লায়েন্টরা ভার্চুয়াল সহকারী এর সার্ভিস নিয়ে থাকেন।
সম্পর্কিত পোস্ট- ঘরে বসে অনলাইন ব্যবসা।
রুম শেয়ারিং ব্যবসা
বিভিন্ন কাজের প্রয়োজনে মানুষ বিভিন্ন এলাকায় যায়, অনেকেই বিভিন্ন পর্যটন এলাকাতে ট্যুর করে থাকেন। এই ভ্রমণে অনেকেই কম বাজেটের নিরাপদ আবাসিক হোটেল খুজেন। কিন্তু অধিকাংশ নিরাপদ এবং ভালো মানের আবাসিক হোটেল এর ভাড়া একটু বেশী হয়ে থাকে, যা অনেকরই বাজেটের বাইরে।
গ্রাহকদের এই চাহিদাকে পুঁজি করে আপনি আপনার বাসার এক্সট্রা রুমটি কম ভাড়ায় আবাসিক হোটেল এর মত ভাড়া দিতে পারেন। যদি আপনার বাসা পর্যটন এলাকায় বা ব্যস্ততম বিভাগীয় বা জেলা শহরে হয়ে থাকে তাহলে শুধুমাত্র আপনার বাসার এক্সট্রা রুমটি ভাড়া দিয়ে ঘরে বসে বিনা পুঁজিতে লাভজনক এই ব্যবসাটি শুরু করতে পারেন। এটি টাকার বিনিময়ে রুম শেয়ারিং সার্ভিস। আমাদের দেশে সীমিত আকারে কেউ কেউ এই ব্যবসাটি করে থাকেন। এই ব্যবসাটি অন্যতম একটি সম্ভাবনাময় ব্যবসা।
বিশ্বে কিছু খ্যাতনামা কোম্পানি যেমন Airbnb, agoda homes, vrbo, homestay, sonder ইত্যাদি তাদের রেজিস্টার্ড মেম্বারদের মাধ্যমে এই ধরনের সার্ভিস দিয়ে থাকেন।
আরও পড়ুন- চা পাতার ব্যবসা
FAQ
প্রথমে আপনি যে ব্যবসাটি করবেন বলে মনস্থির করেছেন সেটা নিয়ে পর্যাপ্ত এনালাইসিস করুন। আপনার টার্গেট ক্লায়েন্ট কারা তাদের সম্পর্কে ভালোভাবে জানুন। কর্মপরিকল্পনা ঠিক করুন। ব্যবসাটি শুরু করার জন্য প্রয়োজনীয় সেটআপ ঠিক করুন। একটা টার্গেট সেট করুন যে একটা নির্দিষ্ট সময় পরে ব্যবসাটিকে আপনি কোন অবস্থানে দেখতে চান। তারপর ব্যবসাটি শুরু করুন। আশা করি একটু সময় লাগলে ও সফল হবেন।
এমনও কিছু ব্যবসা রয়েছে যেগুলো শুরু করতে টাকা লাগেনা তবে সেটি যখন ছোট ব্যবসার পর্যায়ে থাকে তখন সম্ভব। ব্যবসা বড় হওয়ার সাথে সেটা ধরে রাখার জন্য, ব্যবসা আরও বাড়ানোর জন্য বিনিয়োগ লাগবেই।