৫টি চমৎকার ব্যবসা করার টিপস! হয়ে উঠুন সফল ব্যবসায়ী

ব্যবসা শুরু করা একটি চ্যালেঞ্জিং এবং অন্যরকম অভিজ্ঞতা। যদি সঠিক দিকনির্দেশনা এবং পরিকল্পনা থাকে, তবে সেই ব্যবসা তুলনামূলক দ্রুত সময়ে সফলতা অর্জন করে। আজ আমরা পাঁচটি চমৎকার ব্যবসা করার টিপস নিয়ে কথা বলব।
সঠিক ব্যবসা এবং স্থান নির্বাচন
ব্যবসা শুরু করার জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত হল সঠিক ব্যবসা এবং স্থান নির্বাচন। আপনি যেই ধরনের ব্যবসা শুরু করতে চান, সেই ব্যবসা যদি বাজারে চাহিদা না থাকে, তবে সেটা সফল হওয়া কঠিন। প্রথমত, বাজার গবেষণা করে আপনার জন্য সঠিক ব্যবসা কোনটি তার ধারণা পেতে হবে। আপনার লক্ষ্য, ক্রেতার শ্রেণী, অর্থনৈতিক অবস্থা, ভৌগোলিক সুবিধা এবং লোকসংখ্যা কেমন সহ আরো অনেক বিষয় নজরে রাখা ও রিসার্চ করা দরকার। এছাড়া, ব্যবসা শুরু করার স্থানটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ওই স্থানের মানুষের অর্থনৈতিক অবস্থা, পরিবহন ব্যবস্থা, সার্বিক অবকাঠামো এবং স্থানীয় বাজারের চাহিদা মনোযোগ দিয়ে খতিয়ে দেখা ছাড়া উপায় নেই।
উদাহরণস্বরূপ, আপনি একটি শিশুদের দামি খেলনার দোকান খোলার পরিকল্পনা করছেন। তবে ব্যস্ত রাস্তার পাশে বা অফিস এলাকায় সেটি রেখে খুব বেশি লাভ নেই। বরং আবাসিক এলাকা বা স্কুল আছে এমন এলাকায় খোলা হবে বুদ্ধিমানের কাজ। আবার যেহেতু দামি খেলনা বিক্রি করাই আপনার লক্ষ্য তাই ওই আবাসিক এলাকার বাবা মায়ের ক্রয়ক্ষমতা মাথায় রাখতে হবে। তাই এই দুইটি পয়েন্ট খুবই প্রয়োজনীয় ব্যবসা করার টিপস।
গ্রাহক চাহিদা এবং সম্পর্ক নিয়ে মনোযোগী হওয়া
গ্রাহকরাই ব্যবসার প্রাণ ও প্রধান অংশ। তাদের জন্যই একটি ব্যবসার জন্ম। ব্যবসা কতটা সফল হবে তা নির্ভর করে গ্রাহকের সন্তুষ্টির উপর। তাই তাদের চাহিদা পূরণের ওপরে নির্ভর করে একটি ব্যবসার সাফল্য। একজন সফল ব্যবসায়ী হওয়ার জন্য অবশ্যই গ্রাহক চাহিদার প্রতি মনোযোগী হতে হবে। গ্রাহকদের চাহিদা পূরণের বিষয়টি অগ্রাধিকার দেওয়া জরুরি। তাদের মতামত এবং প্রতিক্রিয়া নিয়মিতভাবে জানা এবং তাদের সেই মতে সন্তুষ্টি নিশ্চিত করার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ সফল ব্যবসার জন্য বাধ্যতামূলক। একে সফল ব্যবসা করার টিপস হিসেবে না ভেবে উপায় নেই।
গ্রাহকদের সঙ্গে দীর্ঘমেয়াদী সম্পর্ক গড়ে তোলাও গুরুত্বপূর্ণ ব্যবসা করার টিপস। শুধু বিক্রয়ের সময়টুকু নয়, বিক্রয়ের পরও তাদের সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রাখতে হবে। বিভিন্ন মিডিয়া, ইমেইল,ফোন কল, অথবা সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে তাদের সঙ্গে যোগাযোগে রক্ষা করতে হবে। বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তুললে, তাঁরা বারবার ফিরে আসবে, আপনার ব্যবসার ব্র্যান্ড এম্বেসেডর হয়ে উঠবে এরাই।
বিপণন কৌশল ও প্রযুক্তির ব্যবহার
আজকের যুগে ব্যবসা করার টিপস যে কয়টি আছে তার মধ্যে ডিজিটাল মার্কেটিং অপরিহার্য। ব্যবসাকে সঠিকভাবে প্রচার করতে হলে ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করতেই হবে। কারন ফোনেই মানুষ এখন বেশি সময় কাটায়। ওয়েবসাইট, সোশ্যাল মিডিয়া, ইমেইল মার্কেটিং এবং এসইও (SEO) ইত্যাদির মাধ্যমে পণ্য বা সেবা প্রচার করাটা এখনকার সময়ের সেরা প্র্যাকটিস। সোশ্যাল মিডিয়ায় সফলভাবে মার্কেটিং করতে প্রথমে বুঝতে হবে কাদের ক্রেতা ভাবছেন, তারা কেমন, তারা কোথায় বেশি সময় কাটায়, তাদের ইনকাম কেমন এবং কীভাবে তাদের আকর্ষণ করা সম্ভব।
এর বাইরে, গুগল অ্যাডওয়ার্ডস বা অন্যান্য ডিজিটাল বিজ্ঞাপন মাধ্যম আছে। পণ্য বা সেবা সঠিক গ্রাহকদের কাছে পৌঁছাতে যা ভালো অপশন। তাই তো এটি এই যুগে ব্যবসা করার টিপসগুলোর মধ্যে এটি অন্যতম। ব্যবসার সফলতা একটি বড় পরিসরে নির্ভর করে পরিচিতি লাভের উপর। ব্যবসা করার এই টিপস মানে বিপণন কৌশল ও প্রযুক্তির ব্যবহার তাই খুব জরুরি।
আরও পড়ুন- ১৫ লাখ টাকায় ব্যবসা
প্রতিযোগিতা এবং বাজার বিশ্লেষণ
বাজারে প্রতিযোগিতায় একধাপ এগিয়ে থাকতে চাইলে, আপনাকে অবশ্যই প্রতিযোগিতা এবং বাজার রিসার্চ করতে হবে। ব্যবসা করার এই টিপস কোনভাবেই ভুলে গেলে চলবে না।
ব্যবসার শুরু থেকেই সেই সেক্টরের প্রতিযোগিতার দিকে মনোযোগী হতে হবে। কোন প্রতিযোগী কিভাবে ব্যবসা পরিচালনা করছে এবং সেবা বা পণ্য কেমন মানের দিচ্ছে, এইসব বিষয় দেখলে নিজের ব্যবসাকে আরও উন্নত করা সম্ভব। এটি একটি উল্লেখযোগ্য ব্যবসা করার টিপস।
এছাড়া, বাজার বিশ্লেষণও অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ। যেই সেক্টরের ব্যবসা, তার বর্তমান অবস্থা কেমন, ভবিষ্যতে কী কী পরিবর্তন আসতে পারে, এবং আপনার পণ্য বা সেবা কিভাবে সেই পরিবর্তনের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে পারে— এগুলো ভাবতে হবে। প্রতিযোগীর শক্তি ও দুর্বলতা জানলে, সেই অনুযায়ী কাজ করা ও নানা পদক্ষেপ নেয়া সম্ভব।
অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনা
একজন সফল ব্যবসায়ী হতে হলে, ব্যবসা করার টিপস হিসেবে যা মাথায় না রেখে উপায় নেই তা হল অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনা। ব্যবসা চালাতে গেলে সঠিক বাজেট তৈরী করা এবং ব্যয় নিয়ন্ত্রইরীকরা ছাড়া কোন অপশন নেই। ব্যবসায় যে পরিমাণ খরচ হবে এবং সেই খরচের বিপরীতে কতটা আয় হবে, তা সঠিকভাবে আইডিয়া করতে হবে। কোন খাতে কত খরচ হবে, সেটি নির্ধারণ করে, ব্যবসার আয়-ব্যয়ের মধ্যে সঠিক ভারসাম্য বজায় রাখার চর্চা প্রত্যহম থেকেই রাখতে হবে।
এখানে আলোচনা করা ৫টি চমৎকার ব্যবসা করার টিপস একজন সফল ব্যবসায়ীর মূলমন্ত্রের মতো কাজ করবে। আপনি যদি একজন নতুন ব্যবসায়ী হয়ে থাকেন, একবার উপরে দেয়া টিপস গুলো অনুসরণ করে দেখুন, আপনি অবশ্যই একজন সফল ব্যবসায়ী হয়ে উঠবেন।