৫ বছরে টাকা ডাবল করার কার্যকরী উপায়

টাকা ডাবল করার সহজ উপায় অনেকেই জানতে চান। এর জন্য কিছু কৌশল এবং পরিকল্পনা অনুসরণ করা জরুরি। সঠিক কৌশল ব্যবহার করলে আপনি আপনার টাকা কে দ্রুত বৃদ্ধি করতে পারেন, এমনকি সেটা ২ গুন বা ৩ গুন করতে পারেন। এই আর্টিকেল এ ৫ বছরে টাকা ডাবল করার উপায় কি কি, সে বিষয়ে কিছু গুরুত্বপূর্ণ দিক তুলে ধরা হলো।

Advertisement

৫ বছরে টাকা ডাবল (Money Double) করার উপায় বা কৌশলসমূহ

সবার প্রথমেই বলব, ৫ বছরে টাকা ডাবল করার উপায় এর মধ্যে সবচেয়ে গ্রহনযোগ্য উপায় হল, শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ করা। শেয়ার থেকে দ্রুত আয় করার উপায় আছে। সত্যি বলতে টাকা ডাবল করার চিন্তা মাথায় এলে, সবার প্রথমে শেয়ার বাজারের চিন্তাই মাথায় আসবে। কিন্তু শেয়ার বাজারে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে অনেক বিষয় খেয়াল রাখতে হয়। যেমন সঠিক বিনিয়োগ পরিকল্পনা তৈরি করা, সঠিক পরিকল্পনা ছাড়া আপনি শুধু শেয়ার বাজার নয়, লাইফের কোনো সেক্টরেই সাকসেসফুল হতে পারবেন না। দ্বিতীয়ত, মার্কেট ট্রেন্ড বুঝা ও সেটা বিশ্লেষণ করতে পারা। মার্কেট ট্রেন্ড বুঝতে পারলে কোন শেয়ার কিনে আপনি সেটা ৫ বছরের মধ্যে দ্বিগুন পেতে পারেন,সে বিষয়ে আপনার ধারনা চলে আসবে

অরেকটা বিষয় না বললেই নয়, বিভিন্ন ধরনের ছোট বড় বিনিয়োগের পদক্ষেপ নেওয়া। এক্ষেত্রে আমি শেয়ার নিয়ে দক্ষ হয়ে উঠবেন। আর ৫ বছরে টাকা ডাবল করা আপনার জন্য কঠিন কিছু হবে না।

টাকা ডাবল করতে বিনিয়োগের গুরুত্ব

বিনিয়োগ বা investment এর সময় সঠিক প্ল্যাটফর্ম নির্বাচন করা উচিত। যাচাই করা প্রয়োজন যে প্রতিষ্ঠানটি কতটুকু বিশ্বাসযোগ্য। এজন্য আপনি যে কোম্পানির শেয়ার কিনবেন, কেনার আগে সে কোম্পানি নিয়ে রিসার্চ করুন। তাহলে আপনি নিজেও বুঝতে পারবেন ৫ বছরে কোম্পানির দাম কতটা বাড়তে পারে।  

এতক্ষন আমরা কিভাবে শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ করে আপনার টাকাকে ডাবল করেছি, সেটা জেনেছি। চলুন আরো কিছু বিনিয়োগ এর মাধ্যম নিয়ে জানি, যেগুলোর মাধ্যমে টাকা ৫ বছরে টাকা ডাবল করার অনেকটা সুযোগ থাকে।

Advertisement

মিউচুয়াল ফান্ড (Mutual Fund)

মিউচুয়াল ফান্ড হলো একটি বিনিয়োগের ফাণ্ড।  মিউচুয়াল ফান্ড ব্যবস্থায়  একজন মানুষ কয়েকজন বিনিয়োগকারী থেকে টাকা কালেক্ট করে এবং সেগুলোকে একসাথে  বিনিয়োগ করে। এটি একটি পুল বা মিডিয়াম হিসেবে কাজ করে, যেখানে বিনিয়োগকারীরা তাদের অর্থকে কোনো  অভিজ্ঞ লোককে বা ফান্ড ম্যানেজার কে দেয়, আর তিনি সেগুলোকে বিনিয়োগ করে ভালো লাভ এনে দেয় ।

মিউচুয়াল ফান্ডের মার্কেট ট্রেন্ড সবসময়ই হাইপে থাকে। সে অনুযায়ী বলা মিউচুয়াল ফান্ডের ভবিষ্যত মোটামুটি ভালো। তবে বর্তমান অর্থনৈতিক পরিস্থিতি অবশ্যই বাজার ট্রেন্ডে পরিবর্তন আনতে পারে। ভবিষ্যতে প্রযুক্তির উন্নয়নের সাথে মিউচুয়াল ফান্ডেও নতুন সুযোগ এবং চ্যালেঞ্জ আসতে পারে।

সফল মিউচুয়াল ফান্ডের অনেক  উদাহরণ আছে। বিশ্বজুড়ে অনেক সফল মিউচুয়াল ফান্ড রয়েছে, যেগুলো এখনে  উন্নতি করে আসছে। যেমন, কিছু উদাহরণ হলো টাইমস দ্যা ফান্ড এবং ভ্যানগার্ড 500 ইন্ডেক্স ফান্ড। বাংলাদেশের শেয়ার বাজারে ও বেশ ভালো কিছু লিস্টেড মিউচুয়াল ফান্ড আছে।

মিউচুয়াল ফান্ড বিনিয়োগ করে টাকা ডাবল করা হল ৫ বছরে টাকা ডাবল করার উপায় সমুহের মধ্যে অন্যতম। তবে ঝুঁকি পরিহার বা কমানোর জন্য বিনিয়োগের আগে পুরোপুরি রিসার্চ করা উচিত এবং কোনো পেশাদারির পরামর্শ নেওয়া বুদ্ধিমানের কাজ।

টাকা ডাবল করতে প্রকল্পে বিনিয়োগ

বিভিন্ন প্রজেক্টে ইনভেস্ট করে বেশ ভালোই লাভ করা যায়,  যেটি অনেক সময় ৫ বছরে দ্বিগুন কে ও ছাড়িয়ে যায়।  যেমন কেউ রেস্টুরেন্ট বিজনেস শুরু করছে। তো তার সাথে শেয়ারের মাধ্যমে বিজনেস শুরু করা যায়। এক্ষেত্তে উচ্চ লাভজনক সম্পদ নির্বাচন করা সবচেয়ে বুদ্ধিমানের কাজ।  কোনো প্রজেক্টগুলো লাভজনক হবে, সেগুলো খুজে বের করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সঠিক সম্পদ বাছাই করলে আপনি ভালো রিটার্ন পেতে পারেন। রিসার্চ করে বোঝা উচিত কোন সম্পদগুলো লাভজনক। 

Advertisement

কোনো প্রজেক্টে বিনিয়োগ করলে, আপনাকে কিছু বিষয় অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে। যেমন বিনিয়োগের ঝুঁকি নিয়ে বিশ্লেষণ করা।বাজারের পরিস্থিতি বুঝে চলা। আর্থিক পরামর্শদাতার সাহায্য নেওয়া। এক কথায় ঝুঁকি এড়াতে আপনি যতটুকু সাবধানতা অবলম্বন করতে পারবেন, সেটা আপনার জন্য ততই ভালো। 

টাকা ডাবল করার ক্ষেত্রে আপনাকে কিছু বিষয়ে নজর রাখতে হবে। এক্ষেত্রে প্রাথমিক এবং দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনার গুরুত্ব অনেক। ৫ বছরে টাকা ডাবল করার উপায় জানলেই হবেনা, এটা করতে সঠিক পরিকল্পনা অনেক গুরুত্বপূর্ণ। শুধু তাই নয় স্পষ্ট লক্ষ্য সেট করতে হবে। বিপুল সঞ্চয়ের জন্য আগেই স্ট্রং পরিকল্পনা তৈরি করতে হবে। আরেকটি বিষয়কে গুরুত্বপূর্ন মনে করা তা হল, সময় ধরে নিয়মানুবর্তিতা বজায় রাখা।

টাকা ডাবল করার অর্থনৈতিক উপায়

৫ বছরে টাকা ডাবল করার উপায় এর মধ্যে আরেকটি উপায় হল আর্থিক খাতে বিনিয়োগ করা। সাধারণত, সঞ্চয়, বন্ড, স্টক এবং শেয়ারবাজারের মতো আরো কিছু  বিনিয়োগ পদ্ধতি রয়েছে। দ্বিতীয়ত, ব্যাংক সঞ্চয়ের মাধ্যমে ও সুদ গ্রহণ করে টাকা আয় করা যায়।  যদিও সেটা ইসলাম পরিপন্থী। 

বিভিন্ন ব্যবসায়িক সুযোগ

আপনি নিজের ব্যবসা শুরু করেও টাকা ডাবল করার সুযোগটি নিতে পারেন। ব্যবসায়ে যদি আপনি সফল হন তাহলে আপনার একটি সুযোগ রয়েছে, আপনার ইনভেস্ট করা টাকা ডাবল হয়ে ফিরে আসার সম্ভাবনা বেশী। তবে ব্যবসার ক্ষেত্রে বাজেট পরিকল্পনা এবং পারফেক্ট প্রস্তুতি নিতে ভুলবেন না।

মনে রাখতে হবে যে ঝুঁকি আছে

৫ বছরে টাকা ডাবল করার উপায় জানলেই হবেনা, এটা ও মাথায় রাখতে হবে সব বিনিয়োগেই ঝুঁকি থাকে, সেই কারণে পরিকল্পনা করতে হবে। ঝুঁকি পূর্ণ বিনিয়োগ থেকে বেশি লাভের আশা থাকলেও কিছুটা ক্ষতির ও চান্স থাকতে পারে। তাই, আপনার বিনিয়োগের ক্ষেত্রে লাভ এবং লস দুটোই হতে পারে। এমন মানসিকতা মাথায় রেখে বিনিয়োগে নামবেন।

আর্থিক বাজারে টাকা ডাবল করার জন্য সবচেয়ে ইফেক্টিভ উপায় স্টক মার্কেট, মিউচুয়াল ফান্ড এবং ক্রিপ্টোকারেন্সি। ইতিমধ্যেই আমরা স্টক এক্সচেঞ্জ এবং মিউচুয়াল ফান্ড নিয়ে কথা বলেছি।  তো চলুন এবার ক্রিপ্টোকারেন্সী দিয়ে কিভাবে আপনার টাকা ডাবল করবেন সেই বিষয়ে জেনে নিই।

ক্রিপ্টোকারেন্সী ট্রেডিং (Cryptocurrency trading)

অনলাইনে বিনিয়োগ করে সহজভাবে টাকা ডাবল করার জন্য   ক্রিপ্টোকারেন্সি এক্সচেঞ্জে ট্রেডিং একটি জনপ্রিয় পদ্ধতি। ৫ বছরে টাকা ডাবল করার উপায় এর মধ্যে এটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ সঠিক ট্রেডিং প্যাটার্ন অনুসরণ করে এই ব্যবসা থেকে অবিশ্বাস্য লাভ করা সম্ভব। ক্রিপ্টোকারেন্সী নিয়ে অনেকে না জানলে, সহজেই বুঝিয়ে দিচ্ছি এটা হচ্ছে অনলাইন কারেন্সী। অর্থাৎ টাকার মত  হার্ড ক্যাশ না। ক্রিপ্টোকারেন্সী ট্রেডিং করে সহজেই আপনার টাকাকে ডাবল করতে পারেন। এর জন্য বিভিন্ন ট্রেডিং প্লাটফর্ম আছে।

ক্রিপ্টোকারেন্সি এক্সচেঞ্জ (cryptocurrency exchange) বা ডিজিটাল কারেন্সি এক্সচেঞ্জ ( DCE ) হল এমন একটি ব্যবসা যা গ্রাহকদের অন্যান্য সম্পদের জন্য ডিজিটাল মুদ্রা বা ক্রিপ্টোকারেন্সি এর ব্যবসা করতে দেয় ( উদাহরন-প্রচলিত ফিয়াট মানি বা অন্যান্য ডিজিটাল মুদ্রা)। এই এক্সচেঞ্জগুলি ডিজিটাল মুদ্রা বা ক্রিপ্টোকারেন্সির বিনিময়ে ক্রেডিট কার্ডের অর্থপ্রদান, ওয়্যার ট্রান্সফার বা অন্যান্য ধরনের অর্থপ্রদান গ্রহণ করতে পারে।” (Source- Wikipedia)

এসব প্লাটফর্মে আপনি সহজেই ক্রিপ্টোকারেন্সী কিনে সেগুলো দিয়ে ট্রেডিং করতে পারেন। সিস্টেম টা একটু বলি। ধরুন আজকে আপনি কিছু ক্রিপ্টোকারেন্সী কিনলেন। আজকে সেগুলো দাম ৫ টাকা। ১ বছর আপনি সেগুলোকে রেখে দিলেন। এক বছর পর দাম বাড়লে আপনি সেগুলোকে বিক্রি করে বেশ ভালো এমাউন্ট লাভ করলেন। তবে এক্ষেত্রে ঝুঁকি কমানোর জন্য বা লাভ করার জন্য বায়ারকে একটি নির্দিষ্ট প্রাইস রেঞ্জ এ ক্রয় বা বিক্রয় এর অর্ডার দিয়ে রাখতে হয়। এই ব্যবসায় টিকে থাকা বা ভালো লাভ করার জন্য  অভিজ্ঞতা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। 

শেষ কথা

৫ বছরে টাকা ডাবল করার উপায় জানলেও আসলে এটা বাস্তবায়ন করা সহজ নয়। এক্ষেত্রে ধৈর্যের কোনও বিকল্প নেই। তাই এক্ষেত্রে সাথে সাথে  ভালো ফলাফল আশা করা সম্পূর্ন ভুল। 

আরও পড়ুন- ব্যবসায় সংগঠন ও ব্যবস্থাপনা

Advertisement

Similar Posts

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।