শেয়ার থেকে দ্রুত আয় করার কার্যকরী টিপস

শেয়ার থেকে দ্রুত আয় করার উপায়

শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ করা খুবই চ্যালেঞ্জিং একটি বিষয়  কিন্তু শেয়ার মার্কেটই হল একমাত্র জায়গা, যেখান থেকে দ্রুত অনেক বেশী পরিমাণ অর্থ আয় করা সম্ভব। সঠিক জ্ঞান ও কৌশল ব্যবহার করে শেয়ার থেকে দ্রুত আয় করা অসম্ভব কিছু নয়।

Advertisement

আজকের আর্টিকেলে, আমরা শেয়ার বাজার সম্পর্কে মৌলিক ধারণা থেকে শুরু করে শেয়ার কেনার সঠিক সময় , শেয়ারে ঝুঁকি,  কৌশল. শেয়ার থেকে দ্রুত আয় করার উপায় এবং আরো অনেক বিষয় নিয়ে আলোচনা করব।

শেয়ার বাজারের মৌলিক ধারণা

শেয়ার বাজার এমন একটি জায়গা যেখানে কোম্পানির শেয়ার কেনা-বেচা করা হয়। যার ফলে এখানে বিনিয়োগকারী ও কোম্পানির মধ্যে একটি সম্পর্ক তৈরী হয়। কোনো কোম্পানির  শেয়ার কেনার মানে হলো ঐ কোম্পানির মালিক হয়ে যাওয়া এবং কোম্পানির লাভে অংশ ভাগে পাওয়া । আরো সহজ ভাবে যদি বলি।

উদাহরন স্বরুপ মনে করুন আপনি একটি কোম্পানির শেয়ার কিনছেন। ধরি ঐ কোম্পানিটির দাম বর্তমানে ১০ লাখ। আপনি ৫০% বা হাফ শেয়ার কিনেছেন,  তাহলে আপনি ৫ লাখ টাকা দিয়ে কোম্পানিটির শেয়ার কিনেছেন। 

Advertisement

৫ বছর পর গিয়ে কোম্পানিটির দাম বাড়লো। এবং তা গিয়ে ঠেকলো ২০ লাখ টাকায়। তাহলে আপনি ছিলেন ৫০% শেয়ারের মালিক। সূতরাং ৫ বছর পর গিয়ে আপনি মালিক হবেন ১০ লাখ টাকার।

শেয়ার বাজারে সফল হতে হলে এ সম্পর্কে ভালো ধারণা থাকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সঠিক ধারণা এবং অভিজ্ঞতা থাকলেই শেয়ার থেকে দ্রুত আয় করার উপায় বের করা কঠিন কিছু নয়। সঠিকভাবে ব্যবসা করলে শেয়ার ব্যবসা হল ৫ বছরে টাকা ডাবল করার উপায় গুলোর মধ্যে অন্যতম।

শেয়ার কেনার সঠিক সময়

শেয়ার থেকে দ্রুত আয় করার উপায় জানতে হলে শেয়ার কেনার সঠিক সময় বুঝতে পারা গুরুত্বপূর্ণ। এটি বিনিয়োগের সবচেয়ে  গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এটি বিনিয়োগের সবচেয়ে  গুরুত্বপূর্ণ অংশ। শেয়ার বাজারের দরের ওঠানামা পর্যবেক্ষণ করে সঠিক সময় নির্ধারণ করতে হবে, যাতে বিনিয়োগের উপর বেশ ভালো লাভ করা যায়। কিছু গ্রুপ কিংবা ব্যক্তি শেয়ার কেনার জন্য ভালো সময় সাজেস্ট  করতে পারে। অনেক সময় সেগুলো ফলেও যায়। আবার অনেক ট্রেডিং প্লাটফর্মে, অনেক সিস্টেম থাকে, যেগুলো থেকে ইউজাররা কখন শেয়ারের দাম বাড়তে পারে, সে বিষয়ে আইডিয়া পায়। কিন্তু সবকিছুর উর্দ্ধে গিয়ে, নিজের বুদ্ধি খাটিয়ে এ সময়টা বেছে নিতে হবে । যদি শেয়ার কেনার পর দাম বাড়তে থাকে, তাহলে আপনার লাভ হবে। 

ঝুঁকি এড়ানোর কৌশল

শেয়ার থেকে দ্রুত আয় করার উপায় এর মধ্যে ঝুঁকি এড়ানোর কৌশল জানাও  একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। বিনিয়োগের ক্ষেত্রে বিভিন্ন ধরনের ঝুঁকি থাকে। তাই বিভিন্ন কৌশল জানা এবং সে অনুযায়ী স্টেপ নেওয়া খুবই জরুরি। এক্ষেত্রে ঠিক কোন সময়ে শেয়ার বিক্রির ভালো সময় তা বুঝতে হবে। এবং সঠিক সময়ে তাববিক্রি করতে হবে । আপনি নিজেই কোম্পানি নিয়ে রিসার্চ করতে করতে এ বিষয়ে দক্ষ হয়ে যাবেন, যে ঠিক কোন মুহূর্তে কোম্পানি ঝুঁকি তে পড়তে পারে।

স্বল্পমেয়াদি বিনিয়োগের সুবিধা

স্বল্পমেয়াদি বিনিয়োগের মাধ্যমে দ্রুত সময়ে বেশি লাভ করা অসম্ভব কিছু নয়। এটি শেয়ার থেকে দ্রুত আয় করার উপায় এর মধ্যে অন্যতম। এই ধরনের বিনিয়োগে বাজারের পরিবর্তনের সাথে দ্রুত যেকোনো স্টেপ নেওয়া যায় । অনেক মার্জিন ট্রেডের মাধ্যমেও এ ধরনের বিনিয়োগ সহজ হয়। তবে, এর জন্য সঠিক পরিকল্পনা ও বাজার বিশ্লেষণে এক্সপার্ট হওয়ার প্রয়োজন। তবে সচরাচর স্বল্পমেয়াদী বিনিয়োগের ক্ষেত্রে দেখা যায় লাভ কমই হয়। তবে এখানে বিনিয়োগ করার সবচেয়ে ভালো সুবিধা হল, এখানে লস হবার চান্স টা কম।

Advertisement

শেয়ার বিশ্লেষণের গুরুত্বপূর্ণ দিক

একজন সফল বিনিয়োগকারীকে অবশ্যই শেয়ার বিশ্লেষণের মৌলিক দিক সম্পর্কে জানাতে হবে। এই বিশ্লেষণে যদি তিনি দক্ষ হতে পারেন তবে ভালো লাভ আসবে এরকম শেয়ার বেছে নিতে তিনি দক্ষ হন। বিভিন্ন ধরনের বিশ্লেষণ পদ্ধতি রয়েছে, যেমন টেকনিক্যাল অ্যানালিসিস ও ফান্ডামেন্টাল অ্যানালাইসিস। শেয়ার থেকে দ্রুত আয় করার উপায় জানতে হলে উপরোক্ত অ্যানালাইসিস জানা থাকলে বিনিয়োগকারীর জন্য সুবিধা হবে।

অভিজ্ঞ বিনিয়োগকারীদের পরামর্শ

অভিজ্ঞ বিনিয়োগকারীদের পরামর্শ খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে ।অভিজ্ঞ বা পুরাতন বিনিয়োগকারীরা  তাদের নিজেদের অভিজ্ঞতা দিয়ে নতুন বিনিয়োগকারীদের পথ দেখাতে পারেন। বিভিন্ন পরিবর্তন ও বাজারের স্থিতি অবস্থা সম্পর্কে তাদের দৃষ্টিভঙ্গি এবং তাদের মতামত নতুনদের জন্য অনেক মূল্যবান হতে পারে।

মার্কেট ট্রেন্ড ও ফান্ডামেন্টাল অ্যানালাইসিস

মার্কেট ট্রেন্ড বোঝা খুবই গুরুত্বপূর্ন। কারন মার্কেট ট্রেন্ডের উপরই নির্ভর করবে কোন সময়ে  কোন শেয়ারের দাম বাড়বে কিংবা কোন শেয়ারের দাম কমবে। তাই মার্কেট ট্রেন্ড নিয়ে রিসার্চ করে শেয়ার কেনা কিংবা কোনো শেয়ার বিক্রি করার সময় ও মার্কেট ট্রেন্ড বুে বেশ ভালোই লাভ করা যায়। 

ফান্ডামেন্টাল অ্যানালাইসিস এর মাধ্যমে আপনি কোম্পানির মৌলিক তথ্য বিশ্লেষণ করতে পারেন। কোনো শেয়ারের ক্ষেত্রে ফান্ডামেন্টাল অ্যানালাইসিস কেন গুরুত্বপূর্ণ?  এক কথায় ফান্ডামেন্টাল অ্যানালাইসিস হচ্ছে কোনো কোম্পানি নিয়ে রিসার্চ করা।  যেমন আপনি কোনো কোম্পানির শেয়ার কিনতে চাচ্ছেন। কিন্তু তার আগে কোম্পানিটির ফান্ডামেন্টাল অ্যানালাইসিস করলে আপনি সহজেই বুঝতে পারবেন অদূর ভবিষ্যতে কোম্পানিটি কতটা উন্নতি করতে পারবে। আর এর উপরই নির্ভর করবে কোম্পানিটির শেয়ারের দাম ভবিষ্যতে কত দাড়াবে।  দীর্ঘ মেয়াদী বিনিয়োগের ক্ষেত্রে ফান্ডামেন্টাল অ্যানালাইসিস করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এটিও শেয়ার থেকে দ্রুত আয় করার উপায় এর মধ্যে এটি ও অন্যতম।

ট্রেডিং প্ল্যাটফর্ম নির্বাচন ও ব্যবহার

সঠিক ট্রেডিং প্ল্যাটফর্ম নির্বাচন করাও একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। প্রযুক্তির উন্নতির সাথে সাথে এখন অনেক ট্রেডিং প্ল্যাটফর্ম মার্কেটে এসেছে যেগুলোর ব্যবহার বিনিয়োগকারী দের জন্য ট্রেডিং বিষয় টিকে আরো সহজ করে দিয়েছে। এসব প্লাটফর্মে ইউজাররা শেয়ার বিষয়ক বিভিন্ন আইডিয়া পায়, কখন বাড়বে কিংবা কখন কমবে।  তাই এ প্লাটফর্মগুলো ব্যবহার করতে জানলে শেয়ার থেকে দ্রুত বেশ ভালো পরিমান আয়ের সুযোগ রয়েছে।

সফল শেয়ার ব্যবসায়ীদের গল্প

সফল শেয়ার ব্যবসায়ীদের গল্প আমাদের অনুপ্রেরণা জোগায়। তাদের সাফল্যের পিছনে অনেক পরিশ্রম ও প্রচেষ্টা থাকে। যে শিক্ষা ও অভিজ্ঞতা তারা অর্জন করেছেন তা আমাদের জন্য অমূল্য। তাই আমরা যদি তাদের থেকে এ বিষয়ে গাইড লাইন নিতে পারি, তাহলে পুরো বিষয় টি আমাদের জন্য আরো সহজ হয়ে যায়। এবং কম সময়ে বেশী আয় করা সম্ভব হয়। শেয়ার থেকে দ্রুত আয় করার উপায় জানতে হলে পুরনো অভিজ্ঞ এবং সফল ব্যবসায়ীদের থেকে পরামর্শ নিতে পারেন। এটি আপনাকে নিশ্চিত ভাবে সফল শেয়ার ব্যবসায়ী হতে সাহায্য করবে।

শেষ কথা

শেয়ার থেকে দ্রুত আয় করার উপায় সবাই খোজে কিন্তু সফল হতে পারেনা সবাই। কারন শেয়ার বাজার থেকে আয় করা মোটামুটি ঝুঁকিপূর্ণ একটি প্রসেস যদি আপনার এই বাজার সম্পর্কে সীমিত জ্ঞান থাকে। তাই কেউ এই বাজার সম্পর্কে পুরোপুরি জ্ঞান না নিয়ে এখানে বিনিয়োগ করবেন না। তাহলে বড়সড় ক্ষতির সম্মুখীন হতে পারেন। তাই আগে শিখুন, তারপর বিনিয়োগ করুন এবং আয় করুন।

আরও পড়ুন- ব্যবসায় সংগঠন ও ব্যবস্থাপনা

FAQ

শেয়ার থেকে কিভাবে আয় করা যায়?

যেকোন ব্যবসার ক্ষেত্রে আয় করার প্রধান সূত্র একটাই। কমে কিনুন, বেশী দামে বিক্রয় করুন। কোন একটি শেয়ার কম দামে কিনে বেশী দামে বিক্রি করে আয় করা যায়। এছাড়া কম দামে ভালো কোম্পানির শেয়ার কিনে বছর শেষে কোম্পানি প্রদত্ত ডিভিডেন্ড গ্রহন করেও আয় করা যায়।

কয়টি শেয়ার কিনতে হবে কিভাবে নির্ধারণ করব?

এটা নির্ভর করে আপনার বিনিয়োগ এর পরিমাণ, কোন শেয়ার এবং কত দামের শেয়ার এ বিনিয়োগ করবেন এরকম কিছু বিষয় এর উপর। সাধারণত আপনার পোর্টফলিওতে ৩ থেকে ৪টার বেশী শেয়ার থাকা উচিৎ নয়।

Advertisement

Similar Posts

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।