৫ টি লাভজনক ৫০ হাজার টাকায় ব্যবসা আইডিয়া
৫০ হাজার টাকায় শুরু করা যাবে এমন বেশ কিছু লাভজনক ব্যবসা রয়েছে। যেগুলো সঠিক পরিকল্পনা মাফিক করলে এবং শ্রম দিলে বড় ব্যবসায় পরিণত হতে পারে। এটা তো আমরা জানি যেকোনো ব্যবসায় নিজের শ্রম, পরিকল্পনা এবং লেগে থাকা প্রধান ব্যাপার। ৫০ হাজার টাকায় সহজে শুরু করা যাবে এমন অনেক ব্যবসা রয়েছে। কিন্তু আপনার সুবিধার্থে তালিকা টি সংক্ষিপ্ত করে মাত্র ৫ টি ৫০ হাজার টাকায় ব্যবসা আইডিয়া দেয়া হল। যাতে শুরু করার জন্য একটি উপযুক্ত ব্যবসা নির্বাচন করতে আপনার জন্য সহজ হয়।
৫০ হাজার টাকায় ব্যবসা শুরুর বাছাই করা আইডিয়া
৫০ হাজার টাকায় শুরু করার মত বেশ কিছু ব্যবসা রয়েছে। কিন্তু ঝুঁকি, বিনিয়োগ সীমা সব দিক বিবেচনায় কিছু ব্যবসা ৫০ হাজার টাকায় ব্যবসা আইডিয়ার জন্য নির্বাচন করা যায়। এই আর্টিকেল এ এমন কিছু ব্যবসা নিয়ে সংক্ষিপ্ত ধারনা দেয়া হল।
অনলাইনে খাবারের ব্যবসা
৫০ হাজার টাকায় ব্যবসা আইডিয়ার মধ্যে এটিকে অন্যতম বলা যায়। প্রাথমিক ভাবে এই ব্যবসা ঘর থেকেই পরিচালনা করা যায় বলে এটি একটি জনপ্রিয় ঘরোয়া ব্যবসা ও বটে। সোশ্যাল মিডিয়া তে আপনার প্রতিষ্ঠানের নামে একটি ব্যবসায়িক পেজ খুলে প্রথমদিকে নির্বাচিত কিছু খাবার আইটেম দিয়ে এই ব্যবসাটি শুরু করতে পারেন।
ডেলিভারি এর ঝামেলা এড়ানোর জন্য আপনি নিম্নে উল্লিখিত প্রতিষ্ঠান গুলোর সাথে লিস্টেড হতে পারেন।
- ফুডপাণ্ডা
- পাঠাও
- হাংরি নাকি
- সহজ ফুড
এসব প্রতিষ্ঠান বিক্রির উপর একটা নির্ধারিত হারে কমিশন নিয়ে নেয়। এতে আপনার লাভের পরিমাণ কিছুটা কম হলেও সঠিক সময়ে ডেলিভারি দিতে পারবেন। একই সাথে আপনার ব্যবসার প্রচার ও বাড়বে।
একটা সময় ডেলিভারি এর ঝামেলার জন্য অনেকেই এই ব্যবসাটি এগিয়ে নিতে পারেননি। যদি ও এই সমস্যা টি এখন আর নেই। যদি আপনার খাবার স্বাদ, মান ও বৈচিত্রে এগিয়ে থাকে, তাহলে আপনার ব্যবসা ও অন্যদের চাইতে এগিয়ে থাকবে। শুধু সোশ্যাল মিডিয়ায় না, অফলাইনে ও কিছু প্রচার করা লাগবে। এতে আপনার সেলস এর জন্য বড় নেটওয়ার্ক তৈরি হবে। বিক্রয় বাড়ানোর জন্য একটা শক্তিশালী নেটওয়ার্ক থাকা জরুরী। এই ব্যবসাটি আপনি ৫০ হাজার টাকার ও কম বিনিয়োগে শুরু করতে পারেন। এটি বর্তমানে সবচেয়ে লাভজনক ব্যবসা গুলোর একটি।
মোবাইল ব্যাংকিং ও রিচার্জ এর দোকান
এটি খুবই সাধারন এবং প্রায় নিরাপদ একটি ৫০ হাজার টাকায় ব্যবসা আইডিয়া। বড় আবাসিক এলাকার মোড়ে অথবা মানুষ আসা যাওয়ার পথে একটি মোবাইল ব্যাংকিং এবং রিজার্জ এর দোকান শুরু করতে পারেন। ছোট একটি দোকান হলেই হবে। দোকান এর অগ্রিম এবং চলতি মূলধন মিলিয়ে এই ব্যবসা আপনি ৫০ হাজার টাকার মধ্যে শুরু করতে পারবেন।
এটি একটি নগদ টাকার ব্যবসা এবং পূঁজি নিরাপদ থাকে। এতে দৈনিক লাভ বের করা যায় বলে একে দৈনিক আয়ের ব্যবসা ও বলা যেতে পারে। সঠিক জায়গায় এরকম দোকান করতে পারলে আপনার মাসিক মোট লাভ ৩০০০০-৪০০০০ টাকা কিংবা এর বেশী ও হতে পারে।
চায়ের দোকান এর ব্যবসা
৫০ হাজার টাকায় ব্যবসা আইডিয়া এর মধ্যে চায়ের দোকান খুবই জনপ্রিয় ব্যবসার আইডিয়া। তবে এক্ষেত্রে স্থান নির্বাচন একটি বড় প্রভাবক । শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এর আশেপাশে, মার্কেট এবং আবাসিক এলাকার গলির সামনে এই ব্যবসার জন্য উপযুক্ত স্থান বলে বিবেচনা করা যায়।
এই ব্যবসায় নামতে হলে আপনাকে মানুষের আলোচনা-সমালোচনা থেকে দূরে থাকতে হবে। মনে রাখতে হবে, আপনার উপার্জন অন্য কেউ করে দিবেনা। আপনাকেই করতে হবে। রাস্তার পাশে চায়ের দোকানগুলোর সামনে ক্রেতাদের ভিড় তো দেখেই থাকবেন।
যদি রাস্তার আশেপাশে খোলা স্টল হয়, তাহলে লাভ যেমন আছে, স্থানীয় প্রভাবশালীদের ম্যানেজ করার ব্যাপার ও থাকবে। এগুলো ম্যানেজ করার মানসিকতা থাকতে হবে। একইসাথে চায়ে্র স্বাদ ও ধরণে বৈচিত্র্য ও আনতে হবে ক্রেতাদের আকর্ষণের জন্য।
একবার আপনার চায়ের সুনাম তৈরি হলে বিক্রি এবং লাভ আপনার পিছনে দৌড়াবে। গলির মুখে দোকান হোক, মার্কেট এর ভিতরে অথবা রাস্তার পাশে হোক, চায়ের স্বাদ এখানে বড় প্রভাবক। নাহলে নিয়মিত ক্রেতা তৈরি হবেনা। ব্যবসা টি টিকিয়ে ও রাখা যাবেনা। এটা মাথায় রাখতে হবে।
জুসবার এর ব্যবসা
এই প্রচন্ড গরমে জুসবারগুলোর ব্যবসা নিঃসন্দেহে রমরমা। ৫০ হাজার টাকায় ব্যবসা আইডিয়া গুলোর মধ্যে এটি একটি সেরা ব্যবসা বলা যেতে পারে। একইসাথে বর্তমান মওসুম টাও এই ব্যবসার জন্য সহায়ক। বিশ্বাস না হলে জুসশপ গুলোতে গিয়ে ক্রেতাদের ভিড় দেখুন। এখানেও চায়ের দোকানের মত একই সূত্র। স্বাদ ও ধরণে বৈচিত্র্য থাকতে হবে। জায়গা নির্বাচন এই ব্যবসার ক্ষেত্রে ও বড় প্রভাবক। মানুষ কিছু সময় কাটাতে পারবে এমন স্থান গুলো এই ব্যবসার জন্য উপযুক্ত।
এখানে আরো একটি বিষয় মাথা রাখতে হবে। জুস বানানোর জন্য দক্ষ কারিগর লাগবে। জুসের বিভিন্ন আইটেম বানাতে পারে, এমন কারিগর লাগবে। এখানেও স্বাদ ও বৈচিত্র্য গুরুত্বপূর্ণ। একবার আপনার দোকানের জুস এর সুনাম ছড়ালে আপনার ব্যবসা বড় ও লাভজনক হতে বেশী সময় লাগবেনা।
চাউলের ব্যবসা
৫০ হাজার টাকায় ব্যবসা এর মধ্যে এটি অন্যতম নিরাপদ বিনিয়োগ এবং নতুন ব্যবসার আইডিয়া । প্রথমদিকে এই ব্যবসাটি আপনি আপনার বাসা থেকেই করতে পারেন। এক্ষেত্রে আপনার ক্রেতা আপনি যে এলাকায় থাকেন সেখান কার মুদি দোকানদার হতে পারে। আবার একই এলাকার সরাসরি ভোক্তা ও হতে পারে।
যেকোনো মাঝারি সাইজের আবাসিক এলাকায় কমপক্ষে ২০০ এর কম বেশী পরিবার থাকতে পারে। মাথাপিছু পরিবার প্রতি গড়ে ৫০ কেজি এর ১ বস্তা চাউল লাগলে ঐ এলাকায় মাসিক ২০০ বস্তা চাউলের চাহিদা থাকবে।
এখন আপনার কাজ হচ্ছে ভোক্তার সাথে সরাসরি যোগাযোগ করা। ভোক্তার বাসায় তাদের চাহিদামত চাউল হোম ডেলিভারি দিতে পারলে আপনার ব্যবসা শুরু। পাইকারি থেকে সরাসরি ভোক্তা পর্যায়ে বস্তাপ্রতি অনায়াসে আপনি ৩০০ টাকা এর কম বেশী লাভ করতে পারবেন। এখন ৭০-৮০ টা পরিবারে সরাসরি চাউল ডেলিভারি দিতে পারলে মাসিক ২০০০০ টাকা এর অধিক লাভ করতে পারবেন। এজন্য আপনার বাড়তি লোক ও নিতে হবেনা। পাইকারি মার্কেট এর সাথে ভালো যোগাযোগ থাকলে অনায়াসে আপনি এই নিরাপদ ব্যবসাটি শুরু করতে পারেন।
৫০ হাজার টাকায় ব্যবসা নিয়ে আরও চমৎকার সব আইডিয়া রয়েছে। কম পুঁজিতে লাভজনক ব্যবসা এর জন্য এসব আইডিয়া থেকে সুবিধামত একটি ব্যবসা শুরু করে দিন আজই।
আরও পড়ুন
১০ হাজার টাকায় ২৫ টি ব্যবসার আইডিয়া
২০২৩ এ জনপ্রিয় হতে পারে এমন ৫টি ৫০ হাজার টাকায় ব্যবসা
- একুরিয়াম ফিস এর ব্যবসা
- রেডি টু কুক ফুড এর ব্যবসা
- বেবি কেয়ার সেন্টার
- ভার্চুয়াল ফ্যাশন ব্র্যান্ড
- পেট কেয়ার
FAQ
উপরে যে আইডিয়া গুলো দেয়া হয়েছে ওগুলো ৫০ হাজার টাকা বাজেটের মধ্যে হলে ও একই ব্যবসা আপনি এক লাখ টাকা দিয়ে ও শুরু করতে পারেন। এতে আপনার লাভ ও বেশী হবে। এর ব্যতিত এক লক্ষ টাকা দিয়ে করা যায় এমন ব্যবসা হল পেশাদার ফটোগ্রাফি, পাইকারি ষ্টেশনারী ব্যবসা, মোবাইল সার্ভিসিং, সেকেন্ড হ্যান্ড মোবাইল এর ব্যবসা, টি-শার্ট এর ব্যবসা, ইভেন্ট অরগাইনাজার এর ব্যবসা ইত্যাদি।
৫০০০০ টাকায় করা যায় এমন আরও কিছু ব্যবসা রয়েছে যেগুলো ঘরোয়া হিসেবেই শুরু করা যায়। ব্যবসাগুলো হল হোম মেড কেক/পেস্ট্রি এর ব্যবসা, হোম মেড চিজ এর ব্যবসা, হোম মেড আচার এর ব্যবসা, খাঁটি সরিষা তেল এর ব্যবসা ইত্যাদি।
কমিশনভিত্তিক সিম বিক্রি, চা পাতার ব্যবসা, রোড সাইড টি স্টল, সিজনাল ফল এর ব্যবসা, হোম মেড চিপস, , হোম মেড দই এর ব্যবসা ইত্যাদি। এসব ব্যবসা ৫০০০ টাকা বাজেটের মধ্যেই শুরু করা সম্ভব।
কিছু ব্যবসা আছে যেগুলোতে ২০% এর কম বেশী লাভ করা যায় সরাসরি ক্রেতাদের নিকট বিক্রি করলে। যেমন- মাছের ব্যবসা, সব্জির ব্যবসা ইত্যাদি। এসব ব্যবসায়ে প্রতিদিন মাত্র ৫০০০ টাকা বিক্রি করতে পারলেই ১০০০ টাকা উপার্জন সম্ভব।
দৈনিক আয়ের ব্যবসা যেমন সিম রিচার্জ, সিম বিক্রি, এমএফএস, টি স্টল ইত্যাদি। যেসব ব্যবসা থেকে দৈনিক আয় হিসাব করে বের করে ফেলতে পারবেন মুলত সেসব ব্যবসা হল দৈনিক আয়ের ব্যবসা। এগুলো মুলত কম বিনিয়োগ এর ব্যবসা হয়ে থাকে। ব্যবসার আইডিয়া হিসেবে এগুলো কম বিনিয়োগে ঝুকিমুক্ত ও লাভজনক ব্যবসা।