১০ টি লাভজনক অনলাইন ব্যবসা এর আইডিয়া

অনলাইন ব্যবসা

একজন ব্যবসার মালিক যদি তার ব্যবসার কিছু অংশ বা পুরোটাই ইন্টারনেট ব্যবহার করে পরিচালনা করেন,  তাহলে সেটাকেই অনলাইন ব্যবসা বলে। অনলাইন ব্যবসা বলতে যেকোনো ধরনের অনলাইন সার্ভিসকে বুঝানো হয়। নিজেকে স্বাধীনভাবে মেলে ধরার সুযোগ, বেকারত্বের অভিশাপ থেকে মুক্তি পাওয়ার হাতছানিতে অনেকেই স্বল্প পুঁজি কিংবা কখনো বিনা পুঁজিতে অনলাইন ব্যবসা করার মাধ্যমে স্বাবলম্বী হচ্ছে।

আবার অনেকেরই অনলাইনে ব্যবসা করার ইচ্ছা থাকলেও বুঝে উঠতে পারছেনা মূলধন বিহীন কিভাবে কোন ব্যবসাটি দিয়ে শুরু করবে। আবার শুরু করলেও কি ব্যবসাটি আদৌ লাভের মুখ দেখবে কিনা, এসব প্রশ্ন জাগতে পারে। তবে নিজের দক্ষতা, পরিশ্রমের মিশেলেই অনলাইন ব্যবসায় সফল হতে পারেন আপনিও।

শুধু ধৈর্য থাকতে হবে সহজে হতাশ হবার মতো মন-মানসিকতা আপনায় কখনোই সফলতা এনে দিতে পারবে না। ধৈর্য ধরে দক্ষতার সাথে কাজ করলে আপনিও অবশ্যই সফল হবেন।

চলুন জেনে নেই লাভজনক ১০টি অনলাইন ব্যবসা সম্পর্কে –

অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং

আপনি যদি আপনার ওয়েবসাইট বা বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া প্লাটফর্ম যেমন, ফেইসবুক, ইনস্টাগ্রাম ব্যবহার করে একটি কোম্পানির পণ্য রেফার বা প্রচার করতে পারেন এবং সেখান থেকে যদি পণ্যটি বিক্রি হয় তবে সেখান থেকে আপনি একটি লভ্যাংশ পেয়ে থাকবেন। এই প্রকিয়ার মূলত আ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এর মাধ্যমে সহজেই অনলাইন ব্যবসা করা যায়।

অনলাইনে কাপড়ের ব্যবসা

মানুষের মৌলিক চাহিদার মধ্যে কাপড় একটি, তাই এর চাহিদাও ব্যাপক।  নারী পুরুষ সবাই নিজের কাপড়ে নিত্যনতুন ডিজাইন পছন্দ করে। এই বিষয়টি মাথায় রেখে আপনি দেশের বিভিন্ন স্থানের পাইকারি বাজারগুলো থেকে পাইকারি দরে কাপড় কিনে সেগুলো লাভজনক মূল্যে অনলাইন মার্কেটিং এর মাধ্যমে বিক্রি করতে পারেন। লাভের পরিমাণ ভালো হলে ধীরে ধীরে আপনার অনলাইন ব্যবসা এর পরিধি বাড়াতে পারবেন।

অনলাইন কোর্স

বর্তমানে মানুষ বিভিন্ন স্কিল ডেভেলপমেন্ট থেকে শুরু করে নানারকম বিষয়ে শিক্ষাগ্রহণ করার জন্য অনলাইনের উপর নির্ভরশীল। এজন্য মানুষ অনলাইনে কোর্স কিনে নিজের সুবিধামতো সময়ে শিক্ষাগ্রহণ করে। এক্ষেত্রে আপনি যদি কোনো বিষয়ে পারদর্শী হয়ে থাকেন যেমন : ওয়েব ডেভেলপমেন্ট, গ্রাফিক ডিজাইনিং, ডিজিটাল মার্কেটিং তাহলে এসব বিষয়ে কোর্স করিয়ে অনলাইন ব্যবসা করতে পারেন।

ইউটিউবে ভিডিও তৈরি

অনেক তরুণ ইউটিউবে বিভিন্ন ভিডিও তৈরি করে টাকা আয় করে থাকে। শিক্ষামূলক ভিডিও, এন্টারটেইনমেন্ট ভিডিও এবং আরো অনেক ধরনের ভিডিও রয়েছে। এক্ষেত্রে আপনি আকর্ষণীভাবে ভিডিও উপস্থাপন করে দর্শকের মন জয় করতে পারেন। তাই আপনার যদি উপস্থাপনা গুণ এবং ভিডিও মেকিং স্কিল থেকে থাকে, তাহলে আপনি চেষ্টা করলেই ইউটিউব ভিডিও বানিয়ে আয় করতে পারেন। এটি সময়ের অন্যতম অনলাইন ব্যবসা বা উপার্জনের মাধ্যম।

কনটেন্ট রাইটিং

বর্তমান সময়ে অনলাইন সেক্টরে প্রচুর কন্টেন্ট রাইটার এর চাহিদা রয়েছে। যারা অনলাইন ব্যবসা করতে আগ্রহী তারা ওয়েবসাইট অথবা পণ্য সম্পর্কে নানা কন্টেন্ট বানিয়ে থাকে। তাই ঘরে বসে আপনি ঘরে বসে কন্টেন্ট লেখার মাধ্যমে আয় করতে পারেন। আপনার লেখার মান অনুযায়ী আপনি কন্টেন্ট এর দাম নির্ধারণ করতে পারবেন।

তাই অল্প সময়ে অধিক আয় করার সুযোগ রয়েছে শুধুমাত্র কন্টেন্ট রাইটিং এর মাধ্যমে। পাশাপাশি আপনি যদি কোন সাইট বানিয়ে আয় করতে চান তখন আপনাকে আর টাকা দিয়ে কন্টেন্ট রাইটার নিয়োগ দিতে হবে না। বরং আপনি নিজেই নিজের সাইটের কন্টেন্ট তৈরি করতে পারবেন।

আরও পড়ুন- ই-কমার্স ব্যবসার নিয়ম

ই-বুক রাইটিং

বর্তমানে সবকিছুই প্রায় ইন্টারনেট ভিত্তিক হয়ে যাচ্ছে।  সেইসাথে বদলে যাচ্ছে মানুষের জীবনযাপনের ধরন।  তাই মানুষ বইয়ের থেকে ই-বুক পড়ার প্রতি বেশি নির্ভরশীল হয়ে পড়ছে।  তাই আপনার যদি লেখালেখির ঝোঁক থাকে তবে আপনিও শুরু করতে পারেন ই-বুক রাইটিং। এক্ষেত্রে আপনার সাবলীল ও সময়োপযোগী লেখা পাঠক সমাজে আপনার ই-বুক টি সমাদৃত করতে পারে। বিনা খরচে আপনার সৃজনশীলতা কাজে লাগিয়ে ই-বুক লেখার কাজ করতে পারেন এবং অনলাইনে আয় করতে পারেন। এটিকে সময়ের অন্যতম একটি অনলাইন ব্যবসা বা উপার্জনের মাধ্যম বলা যায়। আমাদের দেশে এখনো ইবুক রাইটিং বা রিডিং অতটা পরিচিত না হওয়ার কারনে এই ব্যবসাটিকে নতুন ব্যবসার আইডিয়া হিসেবে ধরা যায়।

ডেটা এন্ট্রি

এটি আর একটি জনপ্রিয় অনলাইন ব্যবসা। প্রায় সব ধরনের কোম্পানিরই তাদের হিসাবনিকাশ, কর্মকর্তা – কর্মচারীদের তথ্য সহ নানান তথ্যাদি ডেটাবেজে সংরক্ষণ করা হয়। এই কাজগুলোকেই ডেটা এন্ট্রি বলা হয়। আপনি যদি মাইক্রোসফট ওয়ার্ড, এক্সেল ইত্যাদি অ্যাপলিকেশনে কাজ করতে দক্ষ হন তবে আপনিও বিভিন্ন কোম্পানির জন্য ডেটা এন্ট্রি অপারেটর হিসেবে কাজ করতে পারেন।

বর্তমানে খুব দ্রুত বিভিন্ন ই-কমার্স সাইট, স্টার্টআপ গড়ে উঠায় ডেটা এন্ট্রি অপারেটরের চাহিদা অনেকগুণ বেড়ে গেছে। তাই আপনিও ঘরে বসে খুব সহজে বিভিন্ন কোম্পানির চাহিদামাফিক নানাবিধ ডেটা এন্ট্রি করে অর্থ উপার্জন করতে পারেন।

গ্রাফিক ডিজাইন সার্ভিস

গ্রাফিক ডিজাইনে দক্ষতা থাকলে ব্যবসা হিসেবে গ্রাফিক ডিজাইন শুরু করতে পারেন। একটি সৃজনশীল মনের প্রযুক্তিগত জ্ঞান দ্বারা আপনি গ্রাফিক ডিজাইন  সার্ভিসের মাধ্যমে অনলাইন ব্যবসা শুরু করতে পারেন।

সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন

বর্তমান সময়ের অন্যতম একটি অনলাইন ব্যবসা এটি। একটি নির্দিষ্ট বিষয়ের সার্চ রেজাল্টে নির্দিষ্ট ওয়েবসাইটটিকে অন্য সাইটগুলোকে পেছনে ফেলার মাধ্যমে সবার আগে প্রদর্শিত করার প্রচেষ্টা করে থাকে একজন সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজার। কিওয়ার্ড এনালাইসিস, ভিডিও ইমেজ,  ওয়েবপেইজ, পিডিএফ সহ ইত্যাদি বিভিন্ন তথ্য ক্রলিং এবং ইনডেক্সি এর মাধ্যমে যাতে নির্দিষ্ট ওয়েবসাইটটি কাঙ্ক্ষিত ভিজিটরের সার্চে উপরে থাকে এজন্য কোম্পানিগুলো সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজারের দ্বারস্থ হতে হয়।

আপনি এসব কোম্পানিগুলোকে নির্দিষ্ট অর্থের বিনিময়ে সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন বিষয়ক বিভিন্ন পরামর্শ ও কাজ করে দেওয়ার মাধ্যমে অনলাইন ব্যবসা করতে পারেন।

ভার্চুয়াল অ্যাসিস্ট্যান্ট

কর্মব্যস্ত মানুষেরা তাদের প্রচুর ব্যস্ততার কারণে ভার্চুয়াল কাজগুলো করতে পারেন না। জন্য তারা ভার্চুয়াল অ্যাসিস্ট্যান্ট এর প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেন। ভার্চুয়াল অ্যাসিস্ট্যান্ট কাজতি হল কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের পক্ষে তাদের কাজগুলো অনলাইনের মাধ্যমে করে দেয়া। 

উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, কল সেন্টারের কাজের কথা। এছাড়াও ফেসবুক মার্কেটিং ও রয়েছে। আপনি ভার্চুয়াল অ্যাসিস্ট্যান্ট সম্পর্কিত কাজগুলো শিখে তা নিয়ে অনলাইনে ব্যবসা করতে পারেন। 

উপরোক্ত অনলাইন ব্যবসা আইডিয়া ছাড়াও আরও অনেকভাবে অনলাইন ব্যবসার মাধ্যমে আয় করা সম্ভব। তবে আপনি যে কাজই করেন না কেনো, আপনাকে অবশ্যই সে কাজটিতে দক্ষ হতে হবে।

আরও পড়ুন-

ছোট ব্যবসার আইডিয়া

বর্তমানে সবচেয়ে লাভজনক ব্যবসা

ব্যবসা বৃদ্ধিতে ফেসবুক মার্কেটিং এর গুরুত্ব

৫০ হাজার টাকায় ২৫ টি ব্যবসার আইডিয়া

                                            

Similar Posts

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।