১০ হাজার টাকায় ২৫ টি ব্যবসার আইডিয়া ২০২৪
১০ হাজার টাকায় ২৫টি ব্যবসার আইডিয়া নিয়ে সার্চ ইঞ্জিনগুলোতে আপনি অনেক আইডিয়া পেয়ে যাবেন। এছাড়া আপনার চেনাজানা পরিচিত মহলে ১০ হাজার টাকার মধ্যে ব্যবসার আইডিয়া চান, দেখবেন অনেক ব্যবসার আইডিয়া পেয়ে যাচ্ছেন। তবে একটা বিষয় মাথায় রাখতে হবে যে, যে ব্যবসাটিই আপনি শুরু করেন না কেন, উক্ত ব্যবসা সম্পর্কে আপনার মোটামুটি একটা ধারনা থাকতে হবে।
কিন্তু বিনিয়োগ বাজেট যেখানে কম সেখানে সবচেয়ে নিরাপদ ও লাভজনক ব্যবসার আইডিয়া নিয়ে কাজ শুরু করাটা অতীব গুরুত্বপূর্ণ। অবশ্য একই সাথে ব্যবসাটি সম্পর্কে আপনার পূর্ব ধারনা থাকাটা ও জরুরী। মনে রাখা জরুরী যে, মোটামুটি একটা পূর্ব ধারনা ছাড়া কোন ব্যবসা শুরু করা মানে ব্যবসাটি লাভজনক করার আগেই আপনি লসের রাস্তা তৈরি করে রেখেছেন।
স্বল্প বিনিয়োগে লাভজনক ব্যবসা করতে গেলে আপনার পরিকল্পনা অবশ্যই সম্ভাব্য ক্রেতাদের মনোযোগ আকর্ষণ করার মত স্মার্ট ও যুগের সাথে তাল মিলিয়ে চলার মত হতে হবে।
আরেকটি উল্লেখযোগ্য ব্যাপার হচ্ছে, ১০০০০ টাকায় ব্যবসা সফল ও লাভজনক ভাবে করতে গেলে আপনার নিজের পরিকল্পনা ও শ্রম সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।
১০ হাজার টাকায় ব্যবসা করা সম্ভব?
১০ হাজার টাকায় একটি business শুরু করে সেটা লাভজনক করা কি আসলেই সম্ভব? এটা আসলেই অনেকেই ভেবে থাকবেন। যেখানে জিনিষপত্রের দাম লাগামহীন ভাবে বাড়ছে সেখানে এই সামান্য টাকা দিয়ে কিভাবে ব্যবসা করা সম্ভব! বাস্তবতা হল, যদি আপনার সঠিক পরিকল্পনা এবং পরিশ্রম করার মানসিকতা থাকে, তাহলে ১০ হাজার টাকায় ও ব্যবসা শুরু করা সম্ভব। ব্যবসায়ে একটি সঠিক পরিকল্পনা অনেক জরুরী একটা বিষয় যেটা আপনি মাথায় না রেখে পারবেন না। ব্যবসায়িক পরিকল্পনা টা আসলে কি এবং কেন এটি গুরুত্বপূর্ণ?
“ব্যবসায়িক পরিকল্পনা হল একটি আনুষ্ঠানিক লিখিত নথি যা একটি ব্যবসার লক্ষ্য, সেই লক্ষ্যগুলি অর্জনের পদ্ধতি এবং লক্ষ্যগুলি অর্জনের জন্য সময়সীমা থাকে। এটি ব্যবসার প্রকৃতি, সংস্থার পটভূমির তথ্য, সংস্থার আর্থিক অনুমান এবং উল্লিখিত লক্ষ্যগুলি অর্জনের জন্য যে কৌশলগুলি বাস্তবায়ন করতে চায় সেগুলিও বর্ণনা করে। সম্পূর্ণরূপে, এই নথিটি একটি পরিকল্পনা হিসাবে কাজ করে যা ব্যবসার দিকনির্দেশ প্রদান করে।” (সূত্র- wikipedia)
যেহেতু ব্যবসায়িক পরিকল্পনা একটি ব্যবসার দিকনির্দেশক তাই এটি আপনার জন্য অতীব গুরুত্বপূর্ণ যদি আপনি একটি ব্যবসা শুরু করতে চান।
শুধু তাই নয়, আপনার দক্ষ পরিচালনায় এই ব্যবসা লাভজনক ও একসময় অসংখ্য মানুষের কর্মসংস্থানের উৎস ও হয়ে উঠতে পারে। আরেকটা গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার হল, ১০ হাজার টাকা বিনিয়োগ এর ব্যবসাগুলোতে লস হওয়ার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে।
আমাদের দেশের নতুন প্রজন্ম বর্তমানে আত্মনির্ভরশীল হতে চায়। অনেকেই নিজেকে উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে তুলতে চায়। কিন্তু তাদেরকে যে কঠিন চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হতে হয় তা হচ্ছে আর্থিক সমস্যা। এটা খুবই স্বাভাবিক যে আর্থিক দুর্বলতা থেকে এটি ব্যবসা গড়া খুবই কঠিন কাজ। যেখানে প্রতিটা ব্যবসা প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হয়ে উঠছে, সেখানে ১০০০০ টাকায় ব্যবসা শুরুর কথা চিন্তা করতে পারায় সাহসের বিষয়।
তাহলে ১০০০০ টাকায় কি কোন ব্যবসা শুরু করা সম্ভব নয়? অনেকের মনেই এই প্রশ্নটি আসতে পারে, ১০ হাজার টাকা দিয়ে কি ব্যবসা করা যায়?
এর উত্তর ১০ হাজার টাকায় ২৫ টি ব্যবসার আইডিয়া নিয়ে এই লেখাটির মধ্যে পাবেন। এর মধ্যে এমন কিছু লাভজনক ব্যবসা রয়েছে যেগুলো কার্যকর পরিকল্পনা নিয়ে করলে আপনার জীবনের গতিপথও বদলে দিতে পারে। কার্যকর পরিকল্পনা বলার কারণ, আপনার আইডিয়াটি যতই চমৎকার হোক না কেন, একটি অগোছালো পরিকল্পনা আপনাকে শুধু ব্যর্থতা এনে দিতে পারে।
১০ হাজার টাকায় ২৫ টি ব্যবসার আইডিয়া এর তালিকা
নিম্নে প্রদত্ত তালিকায় যে ব্যবসা গুলো নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে সেগুলো থেকে যে কোন একটি বাছাই করে আপনার ব্যবসা শুরু করে দিতে পারেন। অবশ্যই এক্ষেত্রে আপনাকে বিবেচনায় নিতে হবে কোন ব্যবসাটি সম্পর্কে আপনার যথেষ্ট ধারনা রয়েছে এবং এটা নিয়ে আপনি আত্নবিশ্বাসী। কোন ব্যবসা সম্পর্কে কোন ধারনা না থাকলে এবং যথেষ্ট আত্নবিশ্বাসী না হলে সেই ব্যবসা শুরু করাই উচিত নয়।
নিম্নে বাছাই করা ২৫ টি ব্যবসার আইডিয়া নিয়ে আলোচনা করা হল যেগুলো ১০ হাজার টাকায় শুরু করা যায়।
অনলাইন গিফট শপ
আমাদের ১০ হাজার টাকায় ২৫ টি ব্যবসার আইডিয়া এর শীর্ষ লিস্টেই রয়েছে Online Gift Shop । বর্তমানে আমাদের দেশে প্রতিনিয়ত অনলাইন শপিংয়ের চাহিদা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। সেই সাথে আমরা নিজেদের প্রিয়জনদের বিভিন্ন বিশেষ দিনে গিফট দিয়ে থাকি, যা আজকাল খুবই প্রচলিত একটি বিষয়। অনলাইন শপিং এর প্রতি মানুষের আগ্রহ বাড়ার সাথে সাথে মানুষের মধ্যে অনলাইনের মাধ্যমে সারপ্রাইজ গিফট দেওয়ার ও প্রবনতা বাড়ছে। আর এই গিফট গুলো যদি আমরা অনলাইনে খুব সহজেই পেয়ে যাই তাহলে তো সোনায় সোহাগা!
গিফট দেয়া নেয়ার প্রতি মানুষের একটা সহজাত আগ্রহ আছে। মানুষের এই সহজাত আগ্রহকে কাজে লাগিয়ে আপনি এটাকে ব্যবসাতে রুপান্তর করতে পারেন। আপনি চাইলে আপনার আশেপাশের বিভিন্ন পাইকারির দোকান থেকে ছোট ছোট গিফটের উপাদানগুলো পাইকারিতে সংগ্রহ করে পারসনালাইজড করে অনলাইনে খুচরা বিক্রি করতে পারেন। চলমান সময়ে পারসনালাইজড গিফট আইটেমের চাহিদা অনেক।
এসব গিফট আইটেম যেমন আর্টিফিশিয়াল ফু্ চকলেট, বিভিন্ন ডিজাইন এর শোপিস, কাস্টমাইজড উপহার ইত্যাদি গিফট হিসেবে বর্তমানে খুবই জনপ্রিয়। এই ব্যবসাটি আপনি প্রাথমিক পর্যায়ে মাত্র ১০০০০ টাকায় শুরু করতে পারেন। শুধুমাত্র একটি ফেসবুক পেজ খুলে সেটার মাধ্যমে প্রচার করেই আপনি ব্যবসাটি শুরু করতে পারেন।
উপহার সামগ্রীর ব্যবসায়ে বাংলাদেশে প্রায় ২০০০০ এর মত দোকান এবং ৩ লাখ এর অধিক লোক প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত (source- tvsnews)। তবে এত সংখ্যক দোকান এবং লোক এ ব্যবসায়ে জড়িত থাকলেও অনলাইনে গিফট আইটেম বিক্রি করে এমন শপ এর সংখ্যা খুব বেশী নয়। ফলে এ ব্যবসায়ে সফলতার সম্ভাবনা অনেক বেশী।
তাছাড়া Specialized gift item এর ব্যবসায়ে আমাদের দেশে তেমন প্রতিষ্ঠিত বা গোছালো কোন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান নেই। তাই সঠিক পরিকল্পনা নিয়ে এই ব্যবসাটি করতে পারলে সফল হওয়ার সম্ভাবনা বেশী। আপনার প্রতিষ্ঠানের লোগো সম্বলিত আকর্ষণীয় ও ইউনিক প্যাকেজিং এক্ষেত্রে আপনাকে দ্রুত জনপ্রিয়তা লাভে সাহায্য করতে পারে।
আরও পড়ুন- ৩ লাখ টাকার ব্যবসা।
ফুচকার ব্যবসা
আমাদের দেশে সকল বয়সের অধিকাংশ মানুষ ফুচকা খেতে খুবই পছন্দ করে। আপনি চাইলে জনসমাগম হয় এমন একটি নির্দিষ্ট স্থান দেখে ফুড কার্ট নিয়ে ছোট করে ফুচকার দোকান দিতে পারেন।
কাজের মধ্যে লজ্জার কিছু নেই। আর ফুচকার ব্যবসা বর্তমানে অধিক লাভদায়ক এবং এই ব্যবসায় লোকসান হওয়ার আশঙ্কা খুবই কম। ফুচকার ব্যবসা বাংলাদেশের জনপ্রিয় ৫টি স্ট্রিট ফুড এর একটি। ফলে বর্তমানে অনেকের মধ্যে এই ব্যবসা করার প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। জনাকীর্ণ ফুড স্ট্রিট গুলোতে, ব্যস্ত রাস্তার মোড়ে, স্কুল, কলেজ বা ভার্সিটি এর আশেপাশে এই ব্যবসাটি জমজমাট হয়ে থাকে। সাধারণত দেখা যায় একজন সাধারণ ফুচকা ব্যবসায়ীরও মাসিক আয় ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে।
তবে এ ব্যবসায়ে সফলতা পেতে হলে ফুচকার দোকানটি সঠিক জায়গায় স্থাপন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সঠিক জায়গায়, মানে পর্যাপ্ত লোকসমাগম হয় এমন স্থানে আপনার ফুড কার্টটি বসাতে পারলে আপনার মাসিক আয় ৫০০০০ টাকার অধিক ও হতে পারে।
মোবাইল রিচার্জ এর দোকান
মোবাইল রিচার্জ করা অথবা কোন অনলাইন ব্যাংকিং এর থেকে টাকা উত্তোলন করা, এটি বর্তমান বাংলাদেশে খুবই গুরুত্বপূর্ণ চাহিদায় রুপান্তরিত হয়েছে। এই ব্যবসা করার জন্য আপনার বিশাল বড় কোনো দোকানের জন্য নেই। আপনি চাইলে আপনার গ্রামের বাজারে কিংবা শহরের যে কোন স্থানে একটি ছোট্ট টেবিল চেয়ার নিয়েও এই ব্যবসা শুরু করে দিতে পারেন।
এই ব্যবসায় লাভের পরিমাণ খুব কম হলেও এই ব্যবসাটি সারা জীবন করে যাওয়া সম্ভব। এই ব্যবসার মূল ইনকাম হয় কোম্পানির থেকে কমিশন পেয়ে। একটি মোটামুটি মানের রিচারজ এর দোকান থেকে খরচ বাদ দিয়ে মাসিক ২০-২৫ হাজার টাকা আয় করা সম্ভব। যেকোন পাবলিক প্লেস এ একটি চেয়ার টেবিল বসিয়ে ১০০০০ টাকা বিনিয়োগের মধ্যে এই ব্যবসাটি শুরু করে দিতে পারেন। প্রাথমিক মূলধন ও পরিচালনা খরচ কম হওয়ায় এ ব্যবসায়ে লসের সম্ভাবনা ও নেই বললেই চলে।
আরও পড়ুন- গ্রামে ব্যবসার আইডিয়া ।
ফুডকার্ট বা ফুডভ্যান
আমরা রাস্তার পাশে বিভিন্ন ছোট ছোট খাবারের ভ্যান দেখতে পাই। যেখানে খুব অল্প পরিমাণ খাবার আইটেম দিয়েই ভালো খাবার পরিবেশন করা হয়, যার মূল্যও থাকে তুলনামূলক কম। ফুড কার্ট গুলোতে মুলত তরুণরা ভিড় করে থাকেন। এই শ্রেণীর গ্রাহকরা কম দামে ভালো স্নাক্স আইটেম পেলে সেটা নিজেদের সার্কেল এ ফ্রি মার্কেটিং করে দেয়। ভালো মানের খাবার আইটেম দিলে এসব গ্রাহকরা রিপিট কাস্টমার হয় এবং দোকান এর বিক্রি ও বাড়ে।
আপনি চাইলে এমন একটি ছোট্ট ফুড ভ্যান নিয়ে নিজের ব্যবসা শুরু করতে পারেন। ফুড কার্ট একদম কমদামি জিনিষ দিয়ে তৈরি করিয়ে নিবেন যাতে সর্বোচ্চ ৫০০০ টাকার মধ্যে হয়ে যায়। এতে আপনার ১০০০০ টাকা বিনিয়োগের ৫০% খরচ হবে। আর বাকি ৫০% আপনি আপনার ফুডকার্ট এর দৈনিক কাঁচামালের জন্য বিনিয়োগ করবেন। উল্লেখ্য ভালো মানের এবং আধুনিক ফুডকার্ট বানাতে ১ থেকে ১.৫ লাখ টাকা ও খরচ হতে পারে। তবে আপনার বিনিয়োগ যেহেতু ১০০০০ টাকার মধ্যে, তাই আপনি কাজ চালানোর মত একটি ফুডকার্ট বানিয়ে শুরু করতে পারেন।
ফুডকার্ট এ আপনি বিভিন্ন স্নাক্স আইটেম বিক্রি করতে পারেন। যেমন- পিজ্জা, চিকেন, ভেজিটেবল স্নাক্স আইটেম, ফ্রাইড রাইস, পাস্তা, হটডগ ইত্যাদি । যদি আপনার খাবার আইটেম এর মান ভাল হয় এবং দাম তুলনামূলক কম হয়, তাহলে আপনার বিক্রি বাড়বে এটা নিশ্চিত। শুধু খেয়াল রাখবেন আপনার ফুড কার্টটি এমন স্থানে হতে হবে যেখানে জনসমাগম হয় এবং আশেপাশ মোটামুটি খোলা জায়গা আছে ।
১০ হাজার টাকায় ২৫ টি ব্যবসার আইডিয়া এর মধ্যে এটি অন্যতম জনপ্রিয় ব্যবসা।
সম্পর্কিত পোস্ট- দৈনিক আয়ের ব্যবসা ।
চাকরির পাশাপাশি কি ব্যবসা করা যায়
কাগজের ঠোঙার ব্যবসা
কাগজের ঠোঙার ব্যবসা শুনতে অবাক লাগলেও এ ব্যবসাটি বর্তমানে তুমুল লাভজনক একটি ব্যবসা। তাছাড়া সাম্প্রতিক সময়ে দেশে পলিথিন ব্যবহারে নিশেধাজ্ঞা আরোপ এর ফলে কাগজের ঠোঙার ব্যবসা আরও চাঙ্গা হওয়ার বিশাল সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।
দৈনন্দিন জীবনে ব্যবহার করা বিভিন্ন জিনিসপত্র আমরা দোকান থেকে কাগজে ঠোঙা করে কিনে নিয়ে আসি। যার জন্য দেখা যায় যে কাগজের ঠোঙার চাহিদা মার্কেটে বিশাল আকারে রয়েছে। পলিথিনের ব্যবহার অনুমোদিত না বিধায় এর চাহিদা সামনে আরও বাড়বে ধরে নেয়া যায়। তাই আপনি যদি কাগজের ঠোঙা বানিয়ে বিক্রি করার ব্যবসা শুরু করতে পারেন , আপনি খুব সহজেই একটা লাভজনক ব্যবসা দাড় করিয়ে ফেলতে পারবেন। এই ব্যবসাটি নিয়ে অনেকেই ভাবেন না বা গুরুত্ব দেন না বলে এই ব্যবসায়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা ও কম।
কাগজ, আঠা এবং কাটিং মেশিন হলেই আপনি ঘরে বসেই এই ব্যবসা শুরু করতে পারবেন এবং বিভিন্ন দোকানে আপনার এই ঠোঙ্গা সাপ্লাই করতে পারবেন। প্রথম দিকে নিজেই মার্কেটিং এ নেমে পড়ুন, এতে আপনার প্রাথমিক খরচ কম থাকবে। প্রাথমিক অপারেটিং খরচ কম রাখলে সেটি আপনার ব্যবসাকে টিকে থাকতে সাহায্য করবে। পরে বিক্রি বাড়লে বিক্রয় কর্মী রেখে সেলস এর কাজটি করাতে পারেন। আপনার ব্যবসা বড় হলে এমনকি আপনি নিজ ব্র্যান্ড এর নাম দিয়ে বিভিন্ন ডিজাইন ও কোয়ালিটির কাগজের প্যাকেট ও বাজারজাত করতে পারবেন।
আরও পড়ুন- পাঁচ হাজার টাকায় ব্যবসা।
জুসবারের ব্যবসা
কোন মুক্ত স্থান, রাস্তা বা পার্কের পাশেই আপনারা চাইলে একটি জুসবার দিয়ে নিজেদের ব্যবসা শুরু করতে পারেন। বাইরের তীব্র গরমে কিংবা নিজেদের একটু আরাম এর জন্য সবাই একটি সুস্বাদু জুস খেতে চায়। বছরের ১২ মাসই জুস বিক্রি হয়ে থাকে কিন্তু সাধারণত গরমকালে এই ব্যবসাতে ম্যাক্সিমাম বিক্রি হয়ে থাকে। গরমকালকে এই ব্যবসার পিক সিজন (peak season) বলা হয়।
খুব সহজেই কিছু ফলমূল, ব্লেন্ডা্র, পানি এবং চিনি এর সাথে আরো বিভিন্ন উপাদান দ্বারাই আমরা খুব কম মূল্যে একটি জুসবার এর ব্যবসা করতে পারি। নিজে বানাতে পারলে খুবই ভালো নাহলে একজন দক্ষ জুস মেকার রেখে বিক্রি করতে পারলে আপনার ব্যবসার সুনাম বেশী হবে। কারন আপনার জুস এর স্বাদ ও মান যদি অন্যদের চাইতে ভালো হয়, তাহলে এটা খুব সহজেই নতুন ক্রেতাদের আকর্ষণ করবে।
এই ব্যবসাটিতে মোটামুটি ৪০% এর কমবেশী মোট লাভ হয়ে থাকে। তাই ১০ হাজার টাকায় ২৫ টি ব্যবসার আইডিয়া এর মধ্যে এটি একটি অন্যতম পছন্দের ব্যবসা।
পুরনো বইয়ের ব্যবসা
বইপ্রেমী মানুষ ও ছাত্র-ছাত্রীদের কাছে পুরনো বইয়ের এক বিশেষ চাহিদা রয়েছে। ঢাকার বিভিন্ন বাজারে যেমন নীলক্ষেত এবং গুলিস্থানে পুরনো বইয়ের বিশাল বাজার রয়েছে। সেখান থেকে আপনি চাইলেই দশ হাজার টাকার মধ্যে নিজের ব্যবসা গুছিয়ে নিতে পারেন।
এই ব্যবসাটি অনলাইনে বিশেষভাবে গুরুত্ব পেয়ে থাকে। বিভিন্ন বিখ্যাত পুরনো বই এর কালেকশন, একাডেমিক রেফারেন্স বই ইত্যাদি এর গ্রাহক সবসময় থাকে। এসমস্ত বইয়ের গ্রাহকরা সাধারণত অনলাইনেই বেশিরভাগ খোঁজাখুঁজি করে থাকেন। আপনাকে যেটা করতে হবে, একটু এনালাইসিস করে আপনার পুরনো বই এর কালেকশন সাজাতে হবে এবং অনলাইনেই প্রচার বাড়াতে হবে। প্রচার এর কাজটি আপনি অফলাইনে ও করতে পারেন।
যদি আপনার পুরনো কালেকশন ভালো হয় এবং আপনি আপনার এই ব্যবসার প্রচার টার্গেট customer এর নিকট প্রচার করতে পারেন, তাহলে এই ব্যবসাটি আপনাকে ভালো আয় এর সুযোগ করে দিবে। ১০ হাজার টাকায় করা যায় এরকম ব্যবসার আইডিয়া এর মধ্যে এটি একটি ইউনিক ব্যবসা ও বটে।
সম্পর্কিত পোস্ট- নতুন ব্যবসার আইডিয়া।
কাঁসা ও পিতলের ব্যবসা
কাঁসা ও পিতলের ব্যবসা এর কথা শুনলে অনেকে অবাক হতে পারেন। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে কাঁসার এবং পিতলের আসবাবপত্রের দাম এবং চাহিদা দুটোই দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। এই ব্যবসাটি আপনি শুরুতে ছোট আকারে মাত্র ১০ হাজার টাকার মধ্যে শুরু করতে পারেন। তাই আপনি ১০ হাজার টাকায় ২৫ টি ব্যবসার আইডিয়া তে এই ব্যবসাটি অবশ্যই যোগ করতে পারেন।
আপনি সহজেই পাইকারি দোকান থেকে এই সব পণ্য সংগ্রহ করে বেশি লাভে অনলাইনে এবং অফলাইনে বিক্রি করতে পারবেন। কাঁসার জিনিসের মূল্য বেশি হও্য়া এবং সাধারন ক্রেতাদের এর দাম সম্পর্কে কম আইডিয়া থাকায় এর প্রফিট মার্জিন অন্য ব্যবসার তুলনায় কিছুটা বেশী।
তবে খেয়াল রাখতে হবে আপনার পন্যের কোয়ালিটি যাতে অবশ্যই ভালো হয়। কারন এসব পন্যের ক্রেতারা পন্য সম্পর্কে ধারনা রাখেন এবং কোয়ালিটি নিয়ে একটু বেশী সচেতন হয়ে থাকে।
Tailoring এর ব্যবসা
এটি অনেক পুরনো এবং জনপ্রিয় একটি ছোট ব্যবসা যেটি আপনি ১০০০০ টাকা বিনিয়োগে শুরু করতে পারেন। শুধুমাত্র একটি সেলাই মেশিন এবং সেলাইয়ের অন্যান্য আনুষঙ্গিক জিনিষপত্র কিনে আপনি আপনার বাসা থেকেই এই ব্যবসাটি শুরু করতে পারেন। তবে এক্ষেত্রে অবশ্যই আপনার সেলাইয়ের জ্ঞান এবং পর্যাপ্ত অভিজ্ঞতা থাকতে হবে।
ছেলে হোক কি মেয়ে যে কেউ এই ১০০০০ হাজার টাকার ব্যবসাটি ঘরে বসেই করতে পারে। তবে এই ব্যবসাটির সফলতা কাজের দক্ষতার উপর নির্ভরশীল। আপনার কাজ যদি ভালো হয়, তাহলে আপনার ক্রেতার আপনার মার্কেটিং করে দিবে যা নতুন নতুন ক্রেতা পেতে আপনাকে সাহায্য করবে। এই ব্যবসাটি তে বিনিয়োগ হল ঝুঁকিমুক্ত বিনিয়োগ এবং এটি ১০ হাজার টাকার ২৫ টি ব্যবসার আইডিয়া এর মধ্যে অন্যতম লাভজনক ব্যবসা।
হোমমেড ফুড ডেলিভারি
বর্তমান সময়ের একটি অন্যতম জনপ্রিয় ব্যবসা হোমমেড ফুড ডেলিভারি। এটি জনপ্রিয় হওয়ার একটি অন্যতম কারন হচ্ছে অল্প বিনিয়োগে অধিক আয়ের সুযোগ এবং এটি বাসা থেকেই করা সম্ভব। এই ব্যবসাটি ১০ হাজার টাকা, কিংবা এর চাইতে কম বিনিয়োগে ও শুরু করা যায়। এই ব্যবসাটিকে ১০০০ টাকায় ব্যবসা ও বলা যায় কারন এই ব্যবসাটি এমনকি আপনি ১০০০ টাকায় ও নিজ বাসা থেকে শুরু করতে পারেন।
বাংলাদেশে বর্তমানে মহিলাদের মধ্যে এই homemade food delivery ব্যবসাটি জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। অনেকেই এই ব্যবসায় প্রতিষ্ঠিত হয়ে উঠেছেন এবং বেশ ভালো অংকের income ও করছেন।
ঘরে তৈরি খাবার থেকেই প্রতি মাসে একটি ভালো পরিমানে আয় করা সম্ভব এই ব্যবসায়। ঘরে বসে বিভিন্ন রকমের খাবার যেমন কেক, পুডিং, বিস্কুট, মোমো, চিকেন সহ আরো অন্যান্য খাবার বানিয়ে অনলাইনে বিক্রি করে হোম মেড ফুড ডেলিভারি ব্যবসা শুরু করা যায়। খাবারের ব্যবসায় যেটি সবচাইতে বেশী প্রয়োজন সেটা হল খাবারের স্বাদ ও মানে বিচিত্রতা রাখা যেটা আপনাকে আপনার প্রতিদ্বন্দ্বীদের চাইতে ব্যবসাতে এগিয়ে রাখবে।
ফুড ডেলিভারি
বাসায় বসে বাইরের দোকান থেকে খাবার অর্ডার করে খাওয়া মানুষের কাছে এখন খুবই সাধারণ বিষয়। তাই আপনি নিজে চাইলেই ফেসবুকে একটি পেজ খুলে ফুড ডেলিভারি সার্ভিস এর বাবসা করতে পারেন। আপনার এলাকায় থাকা বিভিন্ন রেস্টুরেন্ট এবং হোটেলের সাথে কথা বলে নিজেদের একটি ফুড ডেলিভারি সার্ভিস তৈরি করতে পারেন।
সেখান থেকে আপনি অল্প মুনাফা বা কমিশনের দ্বারাই একটি লাভজনক ব্যবসা দাঁড় করিয়ে ফেলতে পারবেন। তবে এক্ষেত্রে আপনার নিজস্ব একটি ডেডিকেটেড ডেলিভারি টিম দাড় করাতে হবে। এই ব্যবসাটি শুরুর দিকে দাড় করানোটা অনেক চ্যালেঞ্জিং কিন্তু একবার ব্যবসাটি দাড়িয়ে গেলে সফলতা আপনার দরজায় কড়া নাড়বে।
ট্রাভেলিং ব্যবসা
ট্রাভেলিং ব্যবসা করার জন্য আপনার সর্বপ্রথম একটি এজেন্সির সাথে যোগদান করতে হবে। আপনি বিভিন্ন কোম্পানির বাসের টিকিট অথবা ট্যুরে যাওয়ার প্যাকেজ গুলো মানুষের কাছে মার্কেটিংয়ের মাধ্যমে বিক্রি করবেন। এজন্য আপনি একটি নির্দিষ্ট অঙ্কের কমিশন পাবেন।
আপনি যত অধিক মূল্যে এই সব সেবা মানুষের কাছে বিক্রি করতে পারবেন, আপনার নিজের মুনাফা তত বেশি বৃদ্ধি হতে থাকবে। পরবর্তীতে আপনার ব্যবসার লাভের পরিমাণ বাড়লে এবং বড় বিনিয়োগ এর সংস্থান হলে নিজেই একটা ট্রাভেল এজেন্সি শুরু করতে পারেন।
কমিশন ভিত্তিক ছোট আকারে শুরু করা যায় বলে ১০ হাজার টাকায় ২৫ টি ব্যবসার আইডিয়া এর মধ্যে এটি একটি অন্যতম ব্যবসা।
ট্যুর গাইড
আপনি কি এমন কোন স্থানে বসবাস করে থাকেন যেখানে অনেক পর্যটক আসে? তাহলে আপনি আপনার শহরে আসা নতুন মানুষদের পুরো শহর দেখিয়ে ট্যুর গাইড এর ব্যবসা শুরু করে দিতে পারেন। যা পরবর্তীতে একটি বড় ব্যবসায় রূপান্তরিত হওয়ার আশা রাখা যায়। এরকম অনেক সফল টুর গাইড এর উদাহরন রয়েছে। এ ব্যবসাটি করতে আপনার ১০০০০ টাকার মূলধন থাকলেই চলবে। তবে বড় কোন ট্যুর নিজে চালালে বিনিয়োগ এর চাইতে বেশী লাগবে। স্থানীয় পর্যায়ে এ ব্যবসা করতে গেলে ১০০০০ টাকার মূলধনই যথেষ্ট।
এই ব্যবসাটি যেহেতু ব্যক্তিগত যোগাযোগ নির্ভর তাই এটি শুরু করতে তেমন পুঁজি লাগেনা। এটি একটি কম পুঁজিতে লাভজনক ব্যবসা।
কাস্টমাইজড জুয়েলারি
১০ হাজার টাকায় কাস্টমাইজ জুয়েলারি হতে পারে একটি অন্যতম লাভবান ব্যবসা। আপনি যদি নিজে জুয়েলারি বানাতে পারেন তাহলে ঘরে বসেই আপনি ইউনিক ডিজাইন বানিয়ে অনলাইনে নিজের জুয়েলারি বিক্রি করে ভালো অংকের মাসিক আয় অর্জন করতে পারবেন।
এই ব্যবসাটি ব্যক্তিগত দক্ষতা নির্ভর। একইসাথে বেশী কাজ পাওয়ার জন্য আপনার যোগাযোগ দক্ষতা ও থাকা লাগবে।
সম্পর্কিত পোস্ট- ইউনিক বিজনেস আইডিয়া।
বিউটিশিয়ান
আপনি যদি একজন ভালো বিউটিশিয়ান হয়ে থাকেন অথবা আপনার কসমেটিক্স এর ব্যবহার এর উপর ভালো জ্ঞান থেকে থাকে তাহলে আপনি বিভিন্ন মানুষদের পরামর্শ দিয়ে একটি মোটা অংকের টাকা আয় করতে পারবেন। স্কিনের সমস্যার জন্য সাধারণত যে কোন কসমেটিক ব্যবহারের আগে বিউটিশিয়ানদের পরামর্শ নেয়া হয়। ১০ হাজার টাকা এর মধ্যে এটি অন্যতম সম্ভাবনাময় ব্যবসা।
ফ্রিল্যান্স ভিডিওগ্রাফার
আপনি যদি ভিডিওগ্রাফারদের কাজ শিখে থাকেন তাহলে আপনার অবশ্যই একটি ক্যামেরা থাকার কথা। এ ক্যামেরা ব্যবহার করে নিজের একটি ফ্রিল্যান্সিং ক্যারিয়ার তৈরি করতে পারেন যেখানে আপনি অফলাইন ফ্রিল্যান্সার ভিডিওগ্রাফার হিসেবে নিজের এই ব্যবসা শুরু করতে পারবেন। একজন ভালো মানের ভিডিওগ্রাফার ক্ষেত্রবিশেষে ১০০০০০ টাকার অধিক ও মাসিক আয় করতে পারেন যদি তার কাজ ভালোমানের হয়।
এই ব্যবসাটি ও ব্যক্তিগত দক্ষতা নির্ভর। ১০ হাজার টাকা এর মধ্যে এটি অন্যতম ইউনিক ব্যবসা।
ফ্রিল্যান্স ফটোগ্রাফার
আজকাল Freelance photographer দের বিভিন্ন রকমের অনুষ্ঠানের ফটোগ্রাফির জন্য ডাকা হয়। বিভিন্ন ভ্রমন আকর্ষণ স্থানগুলোতে আপনি ফ্রিল্যান্সার ফটোগ্রাফার হিসেবে নিজের সেবা দিয়ে একটি ব্যবসা শুরু করতে পারেন। এখানে আপনি ছবি তুলে দেওয়ার জন্য মানুষের কাছ থেকে পারিশ্রমিক নিবেন। এছাড়া আপনার এলাকার বিভিন্ন ঘরোয়া ও সামাজিক অনুষ্ঠানেও ফ্রিল্যান্স ফটোগ্রাফার হিসেবে কাজ পেতে পারেন।
এই ব্যবসাটি ও ব্যক্তিগত দক্ষতা নির্ভর, একইসাথে আপনার যোগাযোগ দক্ষতা ও একটা ফ্যাক্টর। আপনি ভালো ফটোগ্রাফার কিন্তু কেউ যদি সেটা না জানে তাহলে আপনাকে কাজ কে দিবে?
১০ হাজার টাকায় ২৫ টি ব্যবসার আইডিয়া এর মধ্যে এটি অন্যতম ইউনিক ব্যবসা।
মেকআপ আর্টিস্ট
বিভিন্ন অনুষ্ঠানে যাওয়ার আগে এখন মানুষ পার্লারে গিয়ে নিজেদের সময় নষ্ট করতে চায় না। তারা মেকআপ আর্টিস্ট বাসায় এনেই অল্প সময়ের মধ্যে মেকওভার নিয়ে করিয়ে নেয়। আপনি যদি ভালো মেকাপের কাজ পারেন তাহলে ১০ হাজার টাকার মধ্যেই মেকাপের সকল জিনিসপত্র কিনে একজন মেকাপ আর্টিস্ট হয়ে যেতে পারেন। এই ব্যবসাটি ইদানিং অনেকেই করে থাকেন।
১০ হাজার টাকা এর মধ্যে এটি অন্যতম লাভজনক ব্যবসা।
নাচ, গান বা আর্ট স্কুল
আপনি যদি এই তিনটির একটিতেও দক্ষ হয়ে থাকেন তাহলে আপনি আজকেই শুরু করে দিতে পারেন নাচ, গান বা আর্ট স্কুল। নাচ, গান বা আর্ট স্কুল ১০ হাজার টাকায় ২৫ টি ব্যবসার আইডিয়া এর মধ্যে এটি একটি অন্যতম সহজ এবং লাভবান ব্যবসা হতে পারে। আপনি ছোট ছোট বাচ্চাদের না্চ, গান বা আর্ট শিখিয়ে আপনার জীবনে স্বাবলম্বী হতে পারেন।
ভাষা শিক্ষা
বিদেশ গমনে ইচ্ছুক লোকজন, কিংবা দোভাষী হিসেবে কাজ করার জন্য অনেকেরই বিভিন্ন ভাষা শিক্ষার প্রয়োজন হয়। আপনার যদি এক বা একাধিক বিদেশি ভাষায় দক্ষতা থাকে তাহলে এটিকে বানিজ্যিক রুপ দিয়ে একটা ভাষা শিক্ষা একাডেমি বা স্কুল গঠন করতে পারেন। বর্তমানে মানুষ শখের জন্য, দেশের ভ্রমণ এবং কাজের জন্য ভিনদেশী ভাষা শিখে থাকে। আপনি এই সুযোগটি ব্যবহার করে নিজের ব্যবসা প্রতিষ্ঠিত করতে পারেন।
১০ হাজার টাকা এর মধ্যে এটি একটি ইউনিক বিজনেস আইডিয়া ও সময় উপযোগী ব্যবসা।
ফ্রিল্যান্স কন্টেণ্ট রাইটিং
বর্তমানে অধিকাংশ সময় মানুষ অনলাইনে সময় কাটায়। এই প্রেক্ষিতে অনলাইনে বিভিন্ন ওয়েবসাইটের জন্য কন্টেন্ট রাইটারদের বিশাল একটি কর্ম খাত তৈরি হয়েছে। আপনি একটা কন্টেণ্ট রাইটিং সার্ভিস এজেন্সি খুলতে পারেন এবং এর মাধ্যমে ঘরে বসে আপনি মাসিক বা সাপ্তাহিকভাবে একটি ভালো অংকের টাকা ইনকাম করতে পারবেন।
গ্রাফিকস ডিজাইনিং
Graphics Design বর্তমানে একটি আবশ্যিক চাহিদায় রূপান্তরিত হয়েছে। অনলাইনের ভিন্ন ভিন্ন content এর জন্য একজন গ্রাফিক্স ডিজাইনারের প্রয়োজন হয়ে থাকে। তাছাড়াও ভিজিটিং কার্ড, বিবাহের কার্ড এবং ব্যানারের জন্য একজন দক্ষ গ্রাফিক ডিজাইনারের প্রয়োজন হয়ে থাকে। তাই আপনি চাইলেই গ্রাফিক ডিজাইন শিখে ভালো কোন প্রতিষ্ঠানে চাকরি নিতে পারেন অথবা নিজের ব্যবসাও দাঁড় করাতে পারেন। আপনি চাইলে বিভিন্ন মার্কেটপ্লেস সাইট যেমন- Upwork, peopleperhour, 99designs এ ফ্রিল্যান্স গ্রাফিক্স ডিজাইনার হিসেবে নিজের ক্যারিয়ার গড়তে পারেন।
১০ হাজার টাকার ২৫ টি ব্যবসার আইডিয়া এর মধ্যে এটি একটি জনপ্রিয় ও সময় উপযোগী ব্যবসা।
অনলাইনে বই বিক্রি
দশ হাজার টাকার মধ্যে অনলাইনে আপনি ছোট করে একটি বইয়ের দোকান দিতে পারেন। এখানে আপনি পাইকারি বাজার থেকে কম টাকায় বই কিনে মার্কেটের দাম অনুযায়ী অনলাইনে বই বিক্রি করবেন। আপনার ভিন্ন ভিন্ন বইয়ের কালেকশনে মাধ্যমে গ্রাহকদের আকর্ষণ করতে পারবেন। অনলাইনে বই বিক্রির মাধ্যমে আপনি মাসিকভাবে একটি ভালো অংকের টাকা ইনকাম করতে পারবেন। তবে এক্ষেত্রে আপনার বই এর সংগ্রহ অবশ্যই ভালো হতে হবে।
১০ হাজার টাকা এর মধ্যে এটি একটি ইউনিক ও সময় উপযোগী ব্যবসা।
সম্পর্কিত পোস্ট- ঘরে বসে অনলাইন ব্যবসা।
ক্যাটারিং ব্যবসা
ছোট পরিসরে কোন অনুষ্ঠানের ক্যাটারিং এর আয়োজন করে আপনি চাইলেই নিজের একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান তৈরি করে করতে পারেন। জন্মদিন, মিলাদ মাহফিল, অফিসিয়াল প্রোগ্রামগুলোতে ১০ হাজার টাকা বিনিয়োগে ক্যাটারিং সার্ভিস শুরু করতে পারবেন। প্রাথমিক পর্যায়ে ছোট আকারে প্রোগ্রাম গুলো করতে করতে একসময় আপনি বড় বড় প্রোগ্রাম এর কাজ ও পাওয়া শুরু করবেন।
সঠিক পরিকল্পনা এবং গ্রাহকদের চাহিদামাফিক মানসম্মত ও সময়মত খাবার সরবরাহ করতে পারলে এই ব্যবসাটি অবশ্যই একটি লাভজনক ব্যবসা হয়ে উঠবে।
সম্পর্কিত পোস্ট- বর্তমানে সবচেয়ে লাভজনক ব্যবসা।
পোষা প্রাণীর খাবারের ব্যবসা
মানুষ খুব শখ করে পোষা প্রাণী লালন পালন করে। এইসব পোষা প্রাণীদের যত্নে তারা কোন প্রকার কমতি রাখতে চায় না। তাদের সর্বদা প্রিমিয়াম কোয়ালিটি খাবার প্রদান করার প্রচেষ্টায় থাকে। আপনি যদি পোষা প্রাণীর কোয়ালিটি সম্পন্ন খাবার সরবরাহ করতে সক্ষম হন, তাহলে online এবং off line উভয় ক্ষেত্রেই আপনি ১০০০০ টাকার মধ্যে একটি ভাল ব্যবসা গড়ে তুলতে পারবেন। তবে এই ব্যবসায় আপনাকে প্রাণীদের খাবার সম্পর্কে ভালো আইডিয়া থাকতে হবে।
এই ব্যবসাটি ১০ হাজার টাকার মধ্যে একটি unique business এবং সময় উপযোগী আইডিয়া। ।
উপরে উলেক্ষিত ১০ হাজার টাকায় ২৫ টি ব্যবসার আইডিয়া গুলো দিয়ে আপনি নিজের চলার মত একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠিত করতে পারবেন। ব্যবসা সবসময় একটি কঠিন কাজ কিন্তু একে সঠিকভাবে পরিচালনা করলে, নিজের সম্পূর্ণ শ্রম দিলে ব্যবসায় সফল অবশ্যই হওয়া যায়।
সম্পর্কিত আর্টিকেল পড়ুন- স্টক ব্যবসার আইডিয়া।
১০ হাজার টাকায় ব্যবসার আর ও কিছু আইডিয়া
১০ হাজার টাকায় ২৫টি ব্যবসার আইডিয়া এর বাইরে আরও বেশ কিছু ব্যবসা রয়েছে যেগুলো নিয়ে কাজ করা যায়।
- টিউটর প্রভাইডার সার্ভিস।
- মসুমি ফলের ব্যবসা।
- স্ক্রিন প্রিন্টের ব্যবসা।
- মোবাইল এক্সেসরিজ বিক্রির ব্যবসা।
- ব্যবহৃত মোবাইল বেচাকেনার ব্যবসা।
- পুরনো ফার্নিচার বেচাকেনার ব্যবসা।
- বাসার ব্যবহার এর পুরনো জিনিসপত্রের বেচাকেনার ব্যবসা।
- বাস/এয়ার টিকেট কমিশন এজেন্ট।
- টি স্টল।
আরও পড়ুন-
ব্যবসা বৃদ্ধিতে ফেসবুক মার্কেটিং এর গুরুত্ব
FAQ
৩০ হাজার টাকায় ব্যবসা করা সম্ভব। এমন কিছু ব্যবসা রয়েছে যেগুলো ৩০ হাজার টাকা বিনিয়োগে শুরু করা সম্ভব।
১. হোমমেড খাবারের ব্যবসা
২. মসলার ব্যবসা
৩. খেলনার ব্যবসা
৪. স্টেশনারী আইটেমের ব্যবসা
৫. হোমমেড আচারের ব্যবসা
এমন কিছু ব্যবসা রয়েছে যেগুলো মাত্র ৫ হাজার টাকা বিনিয়োগে শুরু করা সম্ভব।
১. চায়ের দোকান
২. মোবাইল রিচার্জ এর ব্যবসা
৩. খুচরা সবজির ব্যবসা
৪. খুচরা ফলের ব্যবসা
৫. অনলাইনে গিফট আইটেম এর ব্যবসা
৫০ হাজার টাকা দিয়ে নিচের ব্যবসা গুলো শুরু করতে পারেন।
১। ফুটপাথে কাপড়ের ব্যবসা
২। ফুডকার্ট
৩। পাইকারি মাছের ব্যবসা
৪। ষ্টেশনারী আইটেমের ব্যবসা
৫। হোমমেড মসলার ব্যবসা
অল্প পূঁজির ব্যবসা গুলোর বড় ঝুঁকি হল পুজি কম বিধায় একবার লস হলে রিকভার করে আবার শুরু করা সম্ভব হয়না। তাই নির্দিষ্ট ব্যবসা নির্বাচন করে সঠিক পরিকল্পনা নিয়ে ব্যবসা শুরু করতে হবে। অবশ্যই ব্যবসার স্থান নির্বাচনে খেয়াল রাখতে হবে জনসমাগম হয় এমন স্থান। ব্যবসা নির্বাচনের ক্ষেত্রে যেসব ব্যবসাতে তুলনামূলক ঝুঁকি কম সেগুলো বাছাই করতে হবে। অবশ্যই মূলধনের কিছু অংশ পুনরায় বিনিয়োগ করার জন্য রিজার্ভ ফান্ড হিসেবে আলাদা রাখতে হবে।
মনে রাখতে হবে যে ব্যবসায় ঝুঁকি যত বেশী সেই ব্যবসায় লাভের পরিমাণ ও তত বেশী। বেশ কিছু ব্যবসা রয়েছে যেগুলো সবচাইতে লাভজনক ব্যবসার প্রথম কাতারে থাকবে যেমন- মাছের ব্যবসা, সবজির ব্যবসা, কাপড়ের ব্যবসা, কসমেটিকস এর ব্যবসা, খাবারের ব্যবসা ইত্যাদি।
অনলাইন ভিত্তিক অধিকাংশ ব্যবসাই ঘরে বসে করা যায়। ঘরে বসে ব্যবসা আইডিয়া এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল- অনলাইনে খাবার এর ব্যবসা, হোমমেড আচার বা মসলার ব্যবসা, অনলাইনে কাপড়ের ব্যবসা, শেয়ার ব্যবসা ইত্যাদি।
একটি ব্যবসা সেটা ছোট অথবা বড় যাই হোক, কত লাভ হবে সেটা ব্যবসার পরিচালনা এর ধরনের উপর নির্ভর করে। তবে একটি ছোট ব্যবসায়ে আনুমানিক ১০% এর অল্প কম বেশী যে কোন মার্জিন ভালো লাভ হিসেবে গন্য করা যায়।
লাভ কি? যে কোন ব্যবসায় মোট আয় থেকে মোট পরিচালন ব্যয় বাদ দিয়ে নিট যে লাভ থাকে তাকে ব্যবসায় লাভ বলা হয়।
ব্যবসা হল আর্থিক লাভের জন্য পরিচালিত একটি কার্যকলাপ যা গ্রাহকের চাহিদার সাথে সম্পৃক্ত এবং এর মাধ্যমে গ্রাহক আর্থিক বিনিময়ের মাধ্যমে পন্য বা সেবা পেয়ে থাকে।
মাঝারি মানের যে কোন ব্যবসা শুরু করার জন্য ২০ লক্ষ টাকার বিনিয়োগকে ভালো বিনিয়োগ বলা যেতে পারে। ২০ লক্ষ টাকা দিয়ে নিচের ব্যবসাগুল শুরু করা যেতে পারে।
১। এক্সপোর্ট ইমপোর্ট এর ব্যবসা।
২। মসলা উৎপাদন ও বাজারজাতকরন।
৩। চাউলের পাইকারি ব্যবসা।
৪। কনজিওমার আইটেম উৎপাদন ও বিপনন।
৫। স্টক লটের ব্যবসা।